ভাইরাস কি ভাইরাস কিভাবে বিস্তার করে এবং ভাইরাসের মাধ্যমে আক্রান্ত রোগসমূহ
প্রিয় পাঠক, ভাইরাস কি ভাইরাস কিভাবে বিস্তার করে এবং ভাইরাসের মাধ্যমে আক্রান্ত রোগসমূহ সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত তথ্য জানতে চাচ্ছেন, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিজিট করে মনের মত তথ্য পাচ্ছেন না, তাহলে আপনার জন্য এই প্রতিবেদনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রতিবেদনে ভাইরাস কি, ভাইরাসের আকৃতি ও আয়তন, ভাইরাসের বিস্তার এবং ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের রোগ সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, চলুন এগুলো দেখে নিই-
ভাইরাস কি(Virus)
ল্যাটিন শব্দ 'ভাইরাস' এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে 'বিষ'। ভাইরাস নিউক্লিক এসিড ও প্রোটিন সমন্বয়ে গঠিত এক প্রকার অতি অণুবীক্ষণিক অকোষীয় জীবাণু বা কেবলমাত্র উপযুক্ত জীব কোষের অভ্যন্তরে বংশ বৃদ্ধি এবং বিশেষ ধরনের রোগে আক্রান্ত করতে পারে। কিন্তু জীব কোষের বাইরে ভাইরাস জড়বস্তুর মত অবস্থান করে।
ভাইরাসের আকৃতি ও আয়তন
ভাইরাসের আকৃতি নানারূপ হতে পারে, যেমন দন্ডাকার, গোলাকার, চৌকনাকার, ত্রিকোনাকার, ষড়ভুজাকার ইত্যাদি। ভাইরাসের আয়তন অতি অণুবীক্ষণিক যা সাধারণ অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যেও দেখা যায় না। এটি দেখতে ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন হয়।
অধিকাংশ ভাইরাস ২১০ মিলি মাইক্রোন আয়তনের হয়ে থাকে। আমরা জানি, ১ মিলিমিটার = ১০০০ মাইক্রোন এবং ১ মাইক্রন =১০০০ মিলি মাইক্রোন। তাই ভাইরাস হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে ক্ষুদ্র জীব। সাধারণত ভাইরাসের আয়তন ১৭ মিনিমাইক্রোন হতে ৪৫০ মিলিমাইক্রন।
ভাইরাসের বিস্তার
ভাইরাস একটি চরম সংক্রমণকারী জীবাণু। এটি ব্যাকটেরিয়ার মতই বিস্তার লাভ করে, যেমন-
- শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে (যেমন ঠান্ডা জ্বর বা ফ্লু )
- খাদ্য গ্রহণের সাথে (যেমন হেপাটাইটিস-এ, সো ওয়ান ফ্লু, বার্ড ফ্লু),
- সংস্পর্শের মাধ্যমে (যেমন চোখ ওঠা বা কনজাইকটিভাইটিস, জলবসন্ত),
- যৌন সঙ্গমের মাধ্যমে (যেমন এইডস),
- কীটপতঙ্গের মাধ্যমে (যেমন ডেঙ্গু), ইত্যাদি।
ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত রোগসমূহ
এক একটি ভাইরাস দ্বারা এক একটি রোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। কোন ভাইরাস দ্বারা কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারে নিম্নে তার কিছু বর্ণনা দেওয়া হলো-
- পিকর্ণ ভাইরাস (Picorno Viruses) দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পোলিওমাইলেটিস (Poliomyelitis) রোগ হয়।
- রাইনো ভাইরাস (Rhino Viruses) দ্বারা আক্রান্ত হয় যে রোগ তা হল সাধারণ ঠান্ডা লাগা (Commom Cold)
- মাইক্সো ভাইরাস (Myxo Viruses) দ্বারা আক্রান্ত হয়েইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza) রোগ হয়।
- প্যারা মাইক্সো ভাইরাস (Paramyxo Viruses) দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মামস, মিজেলস (Mumps Measles) রোগ হয়।
- র্যাবিস ভাইরাস (Rabies Viruses) দ্বারা আক্রান্ত হয়ে জলাতঙ্ক (Rabies) রোগ হয়।
- রুবেলা ভাইরাস (Rubella Viruses) দ্বারা আক্রান্ত হয়ে জার্মান মিজেলস (German Measles) রোগ হয়।
- হারপিস ভাইরাস (Herpes Viruses) দ্বারা আক্রান্ত হয়ে হারপিস নিমপ্লেক্স, চিকেন পক্স (Herpes Simplex, Chicken Pox) রোগ হয়।
- পক্স ভাইরাস (Pox Viruses) দ্বারা আক্রান্ত হয়ে স্মল পক্স কাউপক্স (Slall Pox,Cow Pox) রোগ হয়।
মন্তব্য
পরিশেষে বলা যায় যে, ভাইরাস একটি মারাত্মক বিষ। এটি হলো এক ধরনের অনু জীবাণু বা অনুকোষক, যা অন্য জীবাণু বা কোষের মধ্যে ঢুকে তাদের কাজ বা গঠনে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়। এটি সাধারণভাবে রোগের কারণ হয়, তবে কিছু ভাইরাস ক্রিয়াশীল থাকতে পারে বিনা হার্ম করে ও সাধারণ জীবন হিসেবে কাজ করতে পারে। ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
Hasi Online IT নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url