প্লেট সঞ্চারণ তত্ত্ব বা পাত সংস্থানিক মতবাদ সম্পর্কিত আলোচনা
প্রিয় পাঠক, আপনি কি প্লেট সঞ্চারণ তত্ত্ব বা পাত সংস্থানিক মতবাদ সম্পর্কিত আলোচনা জানতে খুব আগ্রহী, বিভিন্ন বই-পুস্তক ও ওয়েবসাইট ঘাটাঘাটি করছেন, এই বিষয়ে সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না? তাহলে আপনার জন্য এই প্রতিবেদনটি অত্যন্ত প্রয়োজন।
আজকের এই প্রতিবেদনে প্লেট সঞ্চালন তত্ত্ব বা পাত সংস্থানিক মতবাদ, মতবাদের বর্ণনা, পাত গতির প্রভা্ প্রভাব, পাত সঞ্চালনের কারণ, পাত সঞ্চালনের প্রমাণ সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। চলুন বিস্তারিত জেনে নিন-
ভূমিকা
পর্বত, মালভূমি, মহাদেশ, সমুদ্রের তলদেশ প্রকৃতির গঠন সংক্রান্ত বিভিন্ন মতবাদের মধ্যে পাত সংস্থান মতবাদ সর্বাধুনিক এবং সর্বাংশে গ্রহণযোগ্য। অন্যান্য মতবাদের মত ইহা আনুমানিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয়। তাই ইহাকে এখন আর মতবাদ না বলিয়া প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক সত্য বলা যায়। প্রকৃতপক্ষে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন ভূমিরূপের গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে পরিপূর্ণ তথ্যানুগ কোন তথ্য অদ্যাবধি প্রকাশিত হয় নাই। তাই অতীতের নানা সন্দেহ জল্পনা-কল্পনা ছিন্ন করিয়া ভূবিজ্ঞানে ইহা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সৃষ্টি করিয়াছে।
প্লেট সঞ্চরণ তত্ত্বের মূল মতবাদ
প্লেট সঞ্চারণ তত্ত্বের মূল বক্তব্য হইতেছে যে, ভূপৃষ্ঠ ছোট বড় কয়েকটি প্লেট বা স্লাব দ্বারা গঠিত। এ গুলির মধ্যভাগ অত্যন্ত স্থিতিশীল এবং ভূ আন্দোলনের প্রভাব মুক্ত। কিন্তু ইহাদের প্রান্ত ভাগ গুলিতে ও আন্দোলন খুবই ক্রিয়াশীল। প্লেট গুলির আয়তন কয়েক হাজার বর্গমাইল হইতে কয়েক কোটি বর্গমাইল পর্যন্ত হইতে পারে।
প্লেট সঞ্চরণ তত্ত্বের বর্ণনা
পাত সংস্থাপন মতবাদ অনুসারে সমগ্র ভূপৃষ্ঠ প্রায় ২৭ টি পাতে আবৃত রয়েছে। ইহাদের মধ্যে ৭ বড় ধরনের এবং অবশিষ্ট ২০ বেশ ছোট আকৃতির। প্রধান ৭ টি পাত নিম্নে উল্লেখ করা হইল-
১। প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত (Pacific Plate) ,
২। ইউরেশিয়া পাত (Eurasian Plate ) ,
৩। অস্ট্রেলিয়ান পাত (Australian Plate) ,
৪। উত্তর আমেরিকা পাত (North American Plate) ,
৫। দক্ষিণ আমেরিকা পাত (South American Plate) ,
৬। আফ্রিকা পাত (African Plate) এবং
৭। এন্টারটিকা পাত (Antarctic Plate)।
উল্লেখিত পাতগুলি খুবই স্থিতিশীল এবং ভূ আন্দোলনের প্রভাব মুক্ত, তবে ইয়াদের প্রান্ত ভাগগুলি ভূ-আন্দোলনে খুবই ক্রিশীল। তাই পাতগুলির প্রান্ত ভাগ সর্বদা গতিশীল অবস্থায় রহিয়াছে। পাত সীমানা বরাবর দুইটি শিলাই স্তর তিন ভাগে গতিশীল থাকে। যেমন-
১। সম্প্রসারণ গতি (Extensional Movement),
২। সংকোচনগতি (Compressional Movement) এবং
৩। পার্শ্বিয় গতি (Lateral Movement)।
যেহেতু পাতগুলি পাশাপাশি অবস্থান করিয়া উহাদের সীমানা বরাবর তিনভাগে গতিশীল থাকে সেহেতু পাতের সীমানাগুলি হইতেছে ভূপৃষ্ঠের সমস্ত ভূ-আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল। তাই পাত সীমানা অঞ্চলে ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির প্রভাব খুব বেশি।
পাত সঞ্চারনের গতির প্রভাব
পাতগুলি সীমানা বরাবর সর্বদা গতিশীল থাকিয়া ভূপৃষ্ঠে নানা ধরনের ভূমিরূপ গঠন করিয়াছে। নিম্নে পাত সীমানা অঞ্চলে পাতের ৩ ধরনের গতি এবং উহার প্রভাবে গঠিত বিভিন্ন ভূমিরূপের বিবরণ দেওয়া হইল-
১। পাতের সম্প্রসারণ গতি (Extensional Movement) ঃ
পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পাত যখন তাহাদের সাধারণ সীমানা হইতে পরস্পর বিপরীত দিকে সরিয়া যায় তখন তাহাকে পাতের সম্প্রসারণ গতি বলে।
এ ধরনের গতিসীমা বিকর্ষক সীমা নামে পরিচিত। দুইটি পাত দুই দিকে যাওয়াই বিকর্ষণ সীমায় ভূপৃষ্ঠের চাপ বেশি কমিয়া যায় এবং ভূগর্ভস্থ পদার্থসমূহ দ্রুত তরল ম্যাগমায় পরিণত হইয়া ওপরে উঠিয়া জমা হইতে থাকে। এরূপ ক্রমাগত লাভা প্রবাহের ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল লাভায় আবৃত হয় এবং ধীরে ধীরে সমুদ্রে সু বিস্তৃত কঠিন তলদেশ গঠিত হয়।
প্রত্যেক মহাসাগরের তলদেশ এই প্রক্রিয়ায় গঠিত হইয়াছে। পাত সীমানায় দীর্ঘদিন লাভা সঞ্চিত হইলে উহা উঁচু হইয়া মহাসাগরীয় শৈলশিরা গঠন করে। যেমন মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা, ইহা উত্তরে আইসল্যান্ড হইতে দক্ষিণে তৃস্টার্ন-দা কুনহা দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত। বিজ্ঞানীদের ধারণা অতীতে আটলান্টিকে অবস্থিত সুদীর্ঘ পাত সীমানার ফাটাল দিয়া ভূ-অভ্যন্তরীণ পদার্থসমূহ ওপরে উৎখিত ও সঞ্চিত হইয়া এই শৈলশিরাটি গঠিত হয়েছে।
অন্যান্য সাগর-মহাসাগর গুলিতে এরূপ ছোট বড় বহু শৈলশিরা রহিয়াছে। এই সমস্ত শৈলশিরা হতে পাতগুলি বিপরীত দিকে সরিয়া যাইতেছে, এবং নতুন ভাবে সমুদ্রতলের সৃষ্টি হইতেছে। তাই দেখা যায় যে, পাতের সম্প্রসারণ গতির ফলে সাগর-মহাসাগরের তলদেশ সমুদ্রের শৈলশিরা প্রভৃতি সৃষ্টি হইয়াছে।
২। পাতের সংকোচনগতি (Compressional Movement) ঃ
দুই বিপরীত দিক হইতে একই সাধারণ পাত সীমানামুখী গতিতে পাতের সংকোচন গতি বলে। এই প্রক্রিয়ায় দুইটি পাত মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এইরূপ পাত সীমানাকে অনুগামী সীমা বলে। পাতের এই ধরনের সংঘর্ষে সুদীর্ঘ ভাঁজ পর্বত ও দ্বীপপুঞ্জের সৃষ্টি হইয়াছে। সংকোচন গতির ফলে সামুদ্রিক পাত মহাদেশীয় পাতের নিচে প্রবেশ করার সময় উহার সংঘর্ষে প্রচন্ড ভূমিকম্প ও অগ্নুৎপাত সংঘটিত হয়।
এরূপ সংঘর্ষে স্থলভাগের সীমানা বরাবর সমুদ্র তলের পলল সঞ্চয় স্তুপিকৃত হইয়া পর্বতশ্রেণী গঠন করে। যেমন প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মহাদেশীয় পাতের নিচে নিমজ্জিত হইয়া উহাদের পশ্চিম প্রান্তে যথাক্রমে সুদীর্ঘ রকি ও অন্দিজ পর্বত পর্বতশ্রণী গঠন করিয়াছে। অনুরূপভাবে ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশীয় পর্বতের সংঘর্ষে আল্পস পর্বত সৃষ্টি হইয়াছে।
কোন কোন ক্ষেত্রে সামুদ্রিক পাত নিচের দিকে অগ্রসর হইয়া গলিয়া যায়। নিচের গলিত ম্যাগমা অপেক্ষাকৃত হালকা হওয়ার ফলে উপরে উঠিয়া আসে, এবং ঠাণ্ডা হইয়া বৃত্তাংশের ন্যায় দ্বীপপুঞ্জ গঠন করে। জাপান দ্বীপপুঞ্জ, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ, সুমাত্রা, কালি মান্দান প্রভৃতি দ্বীপপুঞ্জ এইভাবে প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও ভারত মহাসাগরীয় সামুদ্রিক পাত এবং এশিয়ার মহাদেশীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে গঠিত হইয়াছে। এই প্রক্রিয়ায় পর্বত ও দ্বীপপুঞ্জ সৃষ্টির সময় পাতগুলি পরস্পরের সহিত সংযুক্ত হয়।
৩। পাতের পার্শ্বিয় গতি (Lateral Movement) ঃ
পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পাত যদি একে অপরের পাশ কাটিয়া বিপরীত দিকে অগ্রসর হয়, তাহা হইলে সেই গতিকে পাতের পার্শীয় গতি বলে। এরূপ ক্ষেত্রে যদি দুইটি পাত মহাদেশীয় হয় তাহা হইলে উহাদের সীমানায় চুত্যির সৃষ্টি হইবে। এই চুত্যিগুলি প্লেট সীমানা বরাবর অতি দীর্ঘ ও বিরাট আকৃতির হইবে।
তুর্কিস্তানের আনাতেলিয়া চুত্যি, ক্যালিফর্নিয়ার অ্যান্ড্রায়াস চুত্যি, নিউজিল্যান্ডের অ্যালপাইন চুত্যি প্রভৃতি এই প্রকারের সৃষ্টি চুত্যির উদাহরণ। পর্বতের পার্শীয় গতির ফলে হঠাৎ করিয়া চুত্যির সৃষ্টি হইলে ভীষণ ভূমিকম্প হইতে পারে। ১৯৬০ সালে সান-ফ্রান্সিকতে এই কারণে একটি প্রচন্ড ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছিল।
৪। প্লেট গতির ভারসাম্য ঃ
প্লেটের বিভিন্ন প্রকার গতির মধ্যে সর্বদা একটা ভারসাম্য লক্ষ্য করা যায়। সম্প্রসারণ গতির ফলে একদিকে যেমন ভু ভাগ অনেকখানি কমিয়া গিয়া সমদ্র তল বর্ধিত করে। সংকোচন গতির তেমন পরস্পর সংযুক্তির দ্বারা এবং নতুন নতুন দ্বীপ মালা সৃষ্টির মাধ্যমে ভূখণ্ড বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। একদিকে আটলান্টিক ও ভারত মহাসাগর ক্রমান্বয়ে বর্ধিত হইতেছে, অপরদিকে প্রশান্ত মহাসাগর ও স্থলভাগের আয়তনের পরিমাণ মোটামুটি ভাবে সর্বদাই স্থিতিশীল অবস্থায় থাকিতেছে।
পাত সঞ্চালনের কারণ
পাত সমূহের গতিশীলতায় পাত সংস্থান মতবাদের মূল ভিত্তি। কিন্তু পাতগুলি কি শক্তির প্রভাবে গতিশীল হয় তাহা আজও সঠিক ভাবে জানা সম্ভব হয় নাই। কাজেই মতবাদটির এই দুর্বল অংশকে সুদৃঢ় করার জন্য ভূ-বিজ্ঞানীগণ যুক্তিসহকারে কতিপয় ব্যাখ্যা প্রদান করিয়াছেন। যেমন-
১। পরিচলন পদ্ধতি ঃ
পাতগুলিকে চলনশীল করার জন্য বৈজ্ঞানিকগণ ভু অভ্যন্তরে পরিচালন স্রোতের কথা বলেন। চক্রাকারে পরিচালন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূগর্ভে উত্তপ্ত পদার্থ সমূহ ওপরে ওঠে এবং শীতল হয়ে পার্শ্ব দিয়ে নিচে নামিয়ে যায়। এই পরিচালন স্রোতে প্রভাবে পাতগুলি চলনশীল হয়।
২। ধাক্কা বা ঠেলা পদ্ধতি ঃ
এ পদ্ধতিতে ধারণা করা হয় যে, পাত সীমানার ফাটল দিয়া উৎখিপ্ত লাভার ধাক্কায় পাদগুলি বিপরীতমুখী গতিপ্রাপ্ত হয়।
৩। আকর্ষণ পদ্ধতি ঃ
এ পদ্ধতিতে ধারণা করা হয় যে, ভূমিকম্পের দরুণ পাত সীমানা বরাবর মহাসাগরীয় তলদেশ ভূগর্ভে নিমজ্জিত হইলে দুই দিকের পাত পরস্পরের আকর্ষণে সংকোচনশীল গতিপ্রাপ্ত হয়।
উপরোক্ত আলোচনা হতে বোঝা যায় যে, কতিপয় পদ্ধতির মিলিত ক্রিয়ার ফলেই পাতগুলির চলন সম্ভব।
পাত সঞ্চারণ তত্ত্বের প্রমাণ
ভূপৃষ্ঠে যে অনেকগুলি কঠিন পাতদ্বারা গঠিত এবং ওই পাতগুলি যে সর্বদা চলমান অবস্থায় রহিয়াছে সে সম্পর্কে এখন আর সন্দেহ প্রকাশ করিবার কোন অবকাশ নাই। ভূ-বিজ্ঞানীগণ পাতগুলির অস্তিত্ব ও তাহাদের গতিশীলতা সম্পর্কে প্রমাণ স্বরূপ নিম্নলিখিত বিষয়গুলি উল্লেখ করিয়াছেন।
১। পাতের সম্প্রসারণ গতি ঃ
সম্প্রসারণ গতির প্রভাবে সীমানা হইতে পাতগুলি পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইয়া যে পৃথক পৃথক ভূ-ভাগ সৃষ্টি করিয়াছে উহাদের প্রায় প্রত্যেকটির বিপরীত দিকের ভূ-ভাগের প্রান্তের সহিত যথেষ্ট সামঞ্জস্য দেখিতে পাওয়া যায়। তাদেরকে যদি সংকুচিত করিয়া পুনরায় একত্র করা যায় তা হইলে উহারা অতি সুন্দরভাবে মিলিত হইবে।
২। ভূ-কম্পন তরঙ্গ ঃ
ভূ-কম্পন তরঙ্গের বিশ্লেষণের মাধ্যমে ও পাতগুলির গতিশীলতা সম্পর্কে নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। কোন ফাটাল বা চ্যুতির কারণে সৃষ্ট ভূ-কম্পন তরঙ্গ যদি একই সঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্র হইতে গ্রহণ করা হয় তা হইলে উক্ত ফাটল বা চ্যুতির দিক, স্থিতি, আন্দোলনের দিক প্রভৃতি নির্ণয় করা যায়। পাতগুলি যদি চলমান হয় তাহা হইলে উক্ত চ্যুতির দিক, স্থিতি ও আন্দোলনের দিক উহার সহিত সাংগতিপূর্ণ হইবে। বাস্তব পরীক্ষাতে দেখা যায় যে, এই দুইয়ের মধ্যে যথেষ্ট সামঞ্জস্য রহিয়াছে। এই প্রক্রিয়া সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে পাতগুলি গতিশীল অবস্থায় বিরাজমান।
৩। পৃথিবীর চুম্বকত্ব ঃ
পরীক্ষা করিয়া জানা গিয়েছে যে, পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্রে বার বার পরিবর্তিত হইয়াছে। এমনকি কখনো কখনো উত্তর চুম্বক মেরু, দক্ষিণ চুম্বক মেরুতে পরিণত হয়েছে, আবার কখনো উহার উল্টোটি হইয়াছে। পাতগুলির স্থান পরিবর্তন করাই এইরুপ হইয়া থাকে। তাই ধারণা করা হয় পাতগুলি চলনশীল।
৪। আগ্নেয়গিরির অবস্থান ঃ
পাত সীমানা বরাবর রৈখিকভাবে মাপার ন্যায় আগ্নেয়গিরির অবস্থান ও পাত সঞ্চালনের স্বপক্ষে প্রমাণ দেয়। কোন নির্দিষ্ট দিকে চলমান কোন পাতের উপর যদি অনেকগুলি আগ্নেয়গিরি থাকে তবে উহার বিপরীত দিকে আগ্নেয়গিরি গুলি পর্যায়ক্রমিকভাবে অধিক নবীন।
৫। মহাসাগরের তলদেশীয় নমুনা ঃ
সমুদ্র তলদেশের বিভিন্ন স্থান হইতে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করিয়া বৈজ্ঞানিকগণ পাত সংস্থাপন মতবাদের সত্যতার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাহাদের মতে, মহাদেশীয় ভূ-ভাগের তুলনায় মহাসাগরের তলদেশ অধিক নবীন। ইহাছাড়া ভূ-বিজ্ঞানীগণ শিলার ওপর ও নিচের স্তরের মধ্যে বয়সের গড়মিলের তথ্য পাইয়াছেন।
উপসংহার
উপসংহারে বলা যায় যে, মহাদেশ ও সমুদ্রগর্ভের উৎপত্তি সংক্রান্ত নতুন নতুন ধারণা একদিকে যেমন তথ্য নির্ভর অপরদিকে উহাদের কোনটাই প্রশ্নতীত রুপে আজও প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। তবে পাতসংস্থান মতবাদটি কোন বিজ্ঞানীর সুসংগঠিত যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নহে। বরং ইহা অনেকগুলি প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ভূ-বিজ্ঞানীর বাস্তব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলশ্রুতি। ইহা সত্বেও এই মতবাদটি আরো যুক্তি প্রসূত প্রমান্য তথ্যের অপেক্ষা রাখে।
Hasi Online IT নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url