ফ্রিল্যান্সিং কি? নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শিখতে ও দক্ষ হতে কিসের প্রয়োজন
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখার ও করার জন্য কিসের প্রয়োজন এই বিষয়টি নিয়ে কি আপনি খুব চিন্তিত, এ শব্দটি শুনে কি আপনারও এই জগতে প্রবেশ করতে ইচ্ছা হয়? ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবেন ? এখান থেকে কত টাকা ইনকাম করা যায়?এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আমার এই প্রতিবেদনটি আপনার জন্য অতি প্রয়োজনীয়।
আমার এ প্রতিবেদনের মধ্যে রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং কি,কোন উপায়ে করা যায়, দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবেন,অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সাইড কোনগুলো,এ সমস্ত বিষয় সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। চলুন যে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য গুলো জেনে নিই।
ভূমিকা
আপনি কি জানেন ফ্রিল্যান্সিং আসলে কি? কিভাবে কাজ করতে হয়? ফ্রিল্যান্সিং এর মানে হল মুক্ত পেশা। নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করা। বাংলাদেশের অসংখ্য বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের চাহিদা পূরণ করে এই ফ্রিল্যান্সিং, ইহাকে আবার আউটসোর্সিং ও বলা হয়ে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং হল এমন একটি মুক্ত পেশা যেখানে কোন জবাবদিহিতা নেই, অফিস আদালত নেই, নির্দিষ্ট কোন সময়ও নেই, নিজের সুবিধামতো এবং ইচ্ছামত সময়ে কাজ করা যায়। কিন্তু এখানে একটি বড় প্রশ্ন হল কিভাবে করব, কি কাজ করব, কীসের প্রয়োজন ইত্যাদি। এখানে উল্লেখ্য যে ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে প্রথমত একটি বিষয়ে দক্ষ বা স্কিল প্রয়োজন।
আমাদের বাংলাদেশ বিভিন্ন ধরনের কাজের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করা হয়ে থাকে, যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও বানানো,এডিটিং করা, গ্রাফিক ডিজাইন,ওয়েব ডিজাইন,কোডিং, অনিমেশন, ব্লগিং ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং কি
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন, এ বিষয়টি জানতে হলে আগে জানা প্রয়োজন ফ্রিল্যান্সিং কি?ফ্রিল্যান্সিং হল মূলত এমন একটি পেশা, যা নিজের স্বাধীনভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করার উপায়। এখানে সুনির্দিষ্ট কোন অফিস থাকে না। নিজের পছন্দমত স্থানে, এবং নিজের সুবিধামতো সময়ে এই কাজগুলো করা যায়।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, তাদের নিজস্ব ইমপ্লয়ার দিয়ে কাজ না করিয়ে, খন্ডকালীন কিছু ইমপ্লয়ার দের দিয়ে কাজ করিয়ে থাকে। নিজের দক্ষতার ভিত্তিতে বাইরের দেশের ওই সমস্ত কাজগুলো কন্ট্রাকের মাধ্যমে গ্রহণ করে অর্থ উপার্জন করা হয়ে থাকে, এটাই মূলত ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল এবং কুফল সমূহ
ফ্রিল্যান্সিংকে অন্যভাবে বলা যায়, নিজের দক্ষতা, অর্থের বিনিময়ে,কিছু শর্তসাপেক্ষে, অন্যের কাছে বিক্রি করা। যেমন ধরা যাক, আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং,ওয়েব ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন এই সমস্ত বিষয়ে আপনার কাজের দক্ষতা রয়েছে।
বিভিন্ন দেশি এবং বিদেশি ক্লাইন্ট নির্দিষ্ট সময়ে যেমন, হতে পারে ঘণ্টায়, ডেইলি, সাপ্তাহিক এবং মাসিক হিসাবে একটি প্রজেক্ট আপনাকে তৈরি করতে দেবে, যার বিনিময়ে আপনি পারিশ্রমিক হিসাবে কিছু অর্থ ডিমান্ড করবেন, এইভাবে কন্ট্রাক্ট এর মাধ্যমে কাজ করে অর্থ উপার্জন করাই মূলত ফিনান্সিং বা আউটসোর্সিং।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার উপায়
আমরা যে কোন কাজ করি না কেন, সেই বিষয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে দক্ষতা অর্জন করতে হবে । যেমন কৃষি কাজ করতে গেলে, কোন সময় কোন ফসল রোপন করতে হবে, তার পরিচর্যা কিরকম করতে হবে, কোন সময়ের সার,কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে, এ সমস্ত বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
আবার ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গেলে, কি ধরনের ব্যবসা কোন জায়গায় শুরু করবে, কোথায় থেকে কাঁচামাল সরবরাহ করবে, বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। প্রফেসর হতে গেলে ও যে বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন বা দক্ষতা অর্জন করেছেন, সেই বিষয়েই প্রফেসর হতে পারবেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে ও তাই, যে বিষয়ে চিকিৎসক হবে, সেই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
অনুরূপভাবে, ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলেও সেই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে বা স্কিল তৈরি করতে হবে। যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ডাটা এন্টি, ওয়েবসাইট তৈরি, কনটেন্টরাইটিং, সোশ্যাল মার্কেটিং,অ্যাপ ডেভেলপার ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষতা তৈরি করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবেন
এখন প্রশ্ন হল ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবেন, ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখার জন্য কিসের প্রয়োজন , এক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি একটি ভালো প্রতিষ্ঠান। যে কোন কাজ শেখা বর্তমান অনলাইনের যুগে তেমন কষ্টসাধ্য ব্যাপার নয়।
অন্যান্য পোস্ট পড়তে ভিজিট করুনঃ "হাসি অনলাইন আইটি"
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শেখানো হয়ে থাকে। কোথাও সরাসরি উপস্থিত থেকে, আবার কোথাও অনলাইনের মাধ্যমে কাজ শেখানো হয়ে থাকে। গুগলে অথবা ইউটিউবে সার্চ করে এ সম্পর্কে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা পাওয়া যাবে,
ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সেরা কিছু প্রতিষ্ঠানের রয়েছে, ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবেন এক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- অর্ডিনারি আইটি, রাজশাহী।
- রিকভারি আইটি, রাজশাহী।
- ক্রিয়েটিভ আইটি ইন্সটিটিউট, ধানমন্ডি,ঢাকা।
- ইউ ল্যাব ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, বনানী ঢাকা।
- ড্যাফোডিল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ,পান্থপথ,ঢাকা।
- অ্যাডভান্স আইটি সেন্টার বাংলাদেশ,বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি,ঢাকা।
- প্রাইম আইটি ফিনান্সিং ইনস্টিটিউট,ঢাকা -১১০০।
- সফট টাচ আইটি ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ। উত্তরা, ঢাকা।
- ইশিখন ডট কম
- আইটি বাড়ি
- বি আই টি এম
- দূরশা সফ্ট ইনস্টিটিউট
- সফ নেট বিডি
- নেবুলাস আইটি
- এক্সটেন্ট আইটি ইন্সটিটিউট
সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ
ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলি প্লাটফর্ম রয়েছে,এর মধ্যে প্রতিটারই গুরুত্ব অপরিসীম, ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখার ও করার জন্য কিসের প্রয়োজন এই ক্ষেত্রে বলা যায় এর জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণের দক্ষতা অর্জন।যেকোনো একটি প্ল্যাটফর্মে যদি আপনি ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন,তবে সেখান থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে আর্ন করতে পারবেন,এতে কোন সন্দেহ নেই।
নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং জগতে আসতে চান বা কাজ করতে চান,তাদের জন্য যে সমস্ত প্লাটফর্ম গুলি
সহজ ,সুবিধাজনক, অল্প সময়ে দক্ষতা অর্জন করা এবং সম্মানজনক ইনকাম করা যায়,সে বিষয়গুলি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
কনটেন্ট রাইটিংঃ
ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় হচ্ছে কনটেন্ট রাইটিং। খুব অল্প সময়ের মধ্যে কন্টেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করা যায়।আপনি যদি লিখায় বেশি পারদর্শী হয়ে থাকেন,তবে কনটেন্ট রাইটিং আপনার জন্য খুবই উপযুক্ত। মনের ইচ্ছা শক্তি প্রবল থাকলে খুব কম সময়েই কন্টেন্ট লিখার ক্ষেত্রে ভালো স্কিল তৈরি করা সম্ভব, এবং উন্নত মানের কন্টেন্ট লেখা ও সম্ভব।
ভালো মানের কন্টেন্ট দেশে এবং বিদেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং তা বিক্রি করে ও প্রচুর টাকা আয় করা সম্ভব।বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি ও করা যায়।এইজন্য কনটেন্ট রাইটিং কে ফিন্যান্সিং এর প্ল্যাটফর্মে সহজলভ্যতার এবং আর্নিং এর ক্ষেত্রে সবার প্রথমে রাখা যায়।
ডিজিটাল মার্কেটিংঃ
ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর আকাশচুম্বী চাহিদা রয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য সামগ্রীকে প্রচার করার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর সহযোগিতা নিয়ে থাকে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রটি অত্যন্ত বিশাল।
ডিজিটাল মার্কেটিং এ কাজের ক্ষেত্রে অনেক, যেমন,সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ভিডিও সোশ্যাল মার্কেটিং,অ্যাডভার্টাইজিং,ইন্সুরেন্স মার্কেটিং,ই-বুক মার্কেটিং,এফিলিয়েট মার্কেটিং,টেক্সট ইমেজ মার্কেটিং, মিউজিক প্রমোশন ইত্যাদি।
ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে, ফ্রিল্যান্সিং এর প্রচুর পরিমাণে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে।এবং এখান থেকে যথেষ্ট পরিমাণে আর্নিং করা যাবে এই জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং কে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রাখা যেতে পারে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ
গ্রাফিক্স ডিজাইন ফ্রিল্যান্সিং জগতে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি কাজ। অনলাইনের প্রতিটা সেক্টরেই গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ রয়েছে।বড় বড় ইন্ডাস্ট্রি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ব্লগ পর্যন্ত সব স্থানেই গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং জগতে গ্রাফিক্স ডিজাইনের গুরুত্ব অনেক বেশি এবং এখানে পর্যাপ্ত আর্নিং করার সুযোগ রয়েছে।
ওয়েব ডিজাইনারঃ
ওয়েব ডিজাইনার হল ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, বহু ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন। ওয়েবসাইট তৈরি করতে দক্ষ ডিজাইনার প্রয়োজন, ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য একজন দক্ষ ডিজাইনার ভাড়া করা হয়। একজন দক্ষ ওয়েবসাইট ডিজাইনার হলে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। ফ্রিল্যান্সিং জগতে ওয়েব ডিজাইনার একটি জনপ্রিয় কাজ।
ডাটা এনালাইটিক্সঃ
ডাটাএনালাইটিক্স একটি জন প্রিয় ফিনান্সিং এর কাজ।এই সেক্টরে কাজ করে খুব দ্রুত পজিশনে যাওয়া সম্ভব হয় এবং প্রতি মাসে প্রচুর পরিমাণে ইনকাম করা যায়।
লোগো ডিজাইনঃ
বর্তমান সময়ে লোগো ডিজাইন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রিল্যান্সিং কাজ। লোগো ডিজাইন শিখে অনেকেই দক্ষ ফিন্যান্সার হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। অল্প সময়ে এবং দ্রুত সময়ে এই লোগো ডিজাইন শেখা সম্ভব এবং ফ্রিল্যান্সিং জগতে ক্যারিয়ার করা সম্ভব।
এছাড়াও আরো কিছু জনপ্রিয় এবং সহজ ফিন্যান্সিং কাজ রয়েছে যেমন,টি শার্ট ডিজাইন, ফটো এডিটিং,ভিডিও এডিটিং,এসইও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং,লিড জেনারেশন,বুক রাইটার, ট্রান্সলেশন,ট্রান্সক্রিপশন,কপি টাইপিং,ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট,কাস্টমার সাপোর্ট ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখার ও করার জন্য কিসের প্রয়োজনঃ
ফ্রিল্যান্সিং হল একটি মুক্ত পেশা, যে কেউ ঘরে,বাহিরে তার সুবিধামতো সময়ে যেকোনো সময়ে কাজ করতে পারে।তবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য অবশ্যই কিছু জিনিস দরকার চলুন আমরা জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখার ও করার জন্য কিসের প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনঃ
ফ্রিল্যান্সিং জগতে অনেকগুলো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে এর মধ্যে যে কোনো ক্যাটাগরিতে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পুরোপুরি দক্ষতা না থাকলে ক্লায়েন্টকে বোঝানো সম্ভব হবে না,সেই ক্ষেত্রে তেমন কোন সুবিধা পাওয়া যাবে না। মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হলে,আগে পুরোপুরি দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সুতরাং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ট্রেনিং অপরিহার্য।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ধৈর্যঃ
ধৈর্য হচ্ছে একটি মহৎ গুণ।ধৈর্য না থাকলে কোন কাজেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। ফ্রিল্যান্সিং জগতে প্রচুর ধৈর্যের পরিচয় দিতে হয়।এখানে কাজ শিখতে প্রায় ১০ থেকে ১২ মাস সময় লেগে যায়।মনে রাখতে হবে,এই ১০ থেকে ১২ মাস শুধু স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর কাজই করতে হবে।
এই সময় কোন ইনকাম করার চিন্তা করলে ফ্রিল্যান্সিং জগতে সাইন করা সম্ভব নয়। এর পরেও মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলে কাজ পেতে পাঁচ থেকে ছয় মাস সময় লেগে যেতে পারে। আবার যদি কারো রেফারেন্সে কাজ করা হয়,তাহলে সে কাজটিও দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।সুতরাং প্রতিটাকাজে থাকতে হবে ধৈর্য,এবংদক্ষতার সহিত নিজের প্রোফাইল স্ট্রং করতে হবে, যখন একবার প্রোফাইলে ভালো রিভিউ পড়বে,তখন আর কাজের অভাব হবে না। তাই বলা যায়,ফ্রিল্যান্সিং কাজে প্রচুর ধৈর্যের প্রয়োজন হয়।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য প্রয়োজন সময়ঃ
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন হবে। একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হতে গেলে প্রাথমিক পর্যায়ে ২৪ ঘন্টায় অন্ততপক্ষে চার ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হবে। সুতরাং এরকম সময় ব্যয় করতে না পারলে, ফ্রিল্যান্সিং জগতে তেমন কোন সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না।
কম্পিউটার বা ল্যাপটপঃ
ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে অবশ্যই কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ থাকতে হবে।অনেকে মনে করে, স্মার্ট ফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করা সম্ভব, কিন্তু আসলে তা সম্ভব নয়। ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট,ভিডিও এডিটিং,গ্রাফিক্স ডিজাইন এ সমস্ত কাজ করতে হলে,হাই কোয়ালিটির কম্পিউটার প্রয়োজন হবে।
ইন্টারনেট কানেকশনঃ
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ অনলাইনেই করতে হয়।সুতরাং ইন্টারনেটের কানেকশন অবশ্যই থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ওয়াইফাই কানেকশন থাকলে বেশি সুবিধা হয়, ওয়াইফাই এর খরচ তুলনামূলক কম। ওয়াইফাই কানেকশন না পেলে মোবাইল ডাটা দিয়েও সম্ভব,সেক্ষেত্রে খরচ তুলনামূলক বেশি হবে।
ইংরেজি ভালো বলতে পারাঃ
মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে গেলে বিদেশি ক্লায়েন্টদের সঙ্গে অবশ্যই ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে হবে। ক্লায়েন্টদেরকে কাজ সম্পর্কে ডিটেইলস বলা,কাজ বুঝিয়ে নেওয়া,কাজ বুঝিয়ে দেওয়া,এবং কাজের বেনিফিট সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে হলে,ইংরেজিতে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। বায়াররা বাংলা ভাষায় কথা বলবে না।
প্রবল ইচ্ছা শক্তিঃ
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে গেলে প্রবল ইচ্ছা শক্তি এবং মানসিক শক্তি প্রয়োজন। হঠাৎ করে কেউ বলল অনেক ইনকাম করা যায়, সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে দিল, কিছুদিন পরে ইনকাম না আসলে আবার কাজ বন্ধ করে দিল,আসলে বিষয়টা এরকম নয়। মার্কেট প্লেসে অনেক
কাজ রয়েছে, আপনাকে যে বিষয়টি ভালো লাগে, সেই বিষয়ের প্রতি দক্ষতা অর্জন করে লেগে থাকতে হবে। মনে আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে, যেন আপনার দ্বারা এ কাজটি হবে। সব সময় মনে রাখবেন আপনার যদি আত্মবিশ্বাস থেকে থাকে ধৈর্য ও ইচ্ছা শক্তি থাকে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।
কৌশল অবলম্বনঃ
যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে কৌশলী হওয়া অত্যাবশ্যক। ফ্রিল্যান্সিং জগতে কৌশলী না হলে খুব একটা সাইন করা যায় না। যে কোন সমস্যায় মেন্টরের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে,ইউটিউব ফেসবুক এগুলোতে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সার্চ দিয়ে দেখতে হবে।
বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের কাছে সমস্যা বিষয় তুলে ধরে সমাধান চাইতে হবে।যে কোন বিষয়ে সমস্যা নিজের কাছে টিকিয়ে না রেখে সমাধানের বিভিন্ন পথ খুঁজতে হবে।একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হতে গেলে অবশ্যই তাকে কৌশলী হতে হবে। এতক্ষণ ধরে আমরা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখার ও করার জন্য কিসের প্রয়োজন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভবঃ
ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা।ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখার ও করার জন্য কিসের প্রয়োজন এতক্ষণ ধরে এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন দেখা যাক এখান থেকে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব,এখানে যে যত পরিশ্রম করবে,যে যত কাজ করবে,বা যতটা দক্ষতা থাকবে এই সমস্ত বিষয়ের উপরে ইনকামের পরিমাণ নির্ভর করবে। ফ্রিল্যান্সিং এর ইনকামের সঠিক পরিমাণ বলা সম্ভব নয়।
অর্ডিনারি আইটির প্রতিষ্ঠানের এডমিন মোঃ আব্দুল কাওসার এর দেওয়া তথ্য অনুসারে শুধু গুগল এডসেন্স থেকেই প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা ইনকাম হয়ে থাকে। এখান থেকে প্রতি মাসে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা ও ইনকাম করার রেকর্ড হয়েছে।এক্ষেত্রে বলা যায় দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হলে, যথেষ্ট পরিমাণের এবং আনলিমিটেড ইনকামের সুযোগ রয়েছে।
মন্তব্য
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, আমরা এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনেছি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখার ও করার জন্য কিসের প্রয়োজন, ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবেন, ফ্রিল্যান্সিং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যেখানে নিজের দক্ষতা বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে আনলিমিটেড ইনকামের সুযোগ রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে ধৈর্য, সময়, এবং বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আমার এই কনটেন্টটি বা প্রতিবেদনটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে একটা শেয়ার করবেন। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আরো অনেকে জানার সুযোগ পাবে। এতক্ষণ ধরে আমার এ প্রতিবেদনটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।।
Hasi Online IT নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url