ব্যায়াম করার মাধ্যমে কোমর ব্যথা সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা
ব্যায়াম করার মাধ্যমে কি কি উপকার হয়, কি ধরনের ব্যায়ামে কি ধরনের শারীরিক উপকার পাওয়া যায়, কোমর ব্যথা হলে ব্যায়াম করার মাধ্যমে উপকার পাওয়া যায় কিনা এ সমস্ত বিষয় সঠিক তথ্য জানার জন্য আপনি খুব চিন্তিত ? তাহলে আপনার জন্য এই প্রতিবেদনটি অতি প্রয়োজনীয়।
এই প্রতিবেদনে ব্যায়াম করার বিভিন্ন পদ্ধতি সমূহ, কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা এবং কোমর ব্যথা সারানোর জন্য কি ধরনের ব্যায়াম করা উচিত এ সমস্ত বিষয় সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে। চলুন এইবার দেখে নিই এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য-
ভূমিকা
ব্যায়াম আসলে কি, ব্যায়াম হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা সমস্ত শরীর অথবা শরীরের কিছু অংশ সচল রাখার জন্য বা তার কার্যকে ত্বরান্বিত রাখার জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। যেমন পায়ে হাটা, পানিতে সাঁতার কাটা, পদ্মাসনে বসা, ইত্যাদি। চলুন আমরা জেনে নিন ব্যায়াম করলে কি ধরনের উপকার পাওয়া যায়।
ব্যায়াম করার পদ্ধতি সমূহ
ব্যায়াম শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য সচল রাখে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা দূর হয়, মনে প্রশান্তি আনে, নিয়মিত ঘুম হয়, শরীর সুস্থ থাকে, তবে এক এক ধরনের ব্যায়াম করার মাধ্যমে এক এক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। শরীর সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করার পদ্ধতি গুলো জেনে নিন।
দৈনন্দিন কাজের মাধ্যমে ব্যায়ামঃ
আমরা প্রতিদিন নিয়মিত কাজের মাধ্যমে ব্যায়াম করতে পারি। যেমন কৃষক শ্রেণীর লোকর প্রতিদিন কৃষি কাজের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ব্যায়াম হয়ে থাকে, দিনমজুর শ্রেণীর লোক তাদের কাজের মাধ্যমে শরীরের ব্যায়াম হয়ে থাকে। বিভিন্ন কলকারখানার শ্রমিক তাদের দৈনন্দিন কাজের মাধ্যমে অটোমেটিক ব্যায়াম হয়ে যায়। রিক্সা চালক নিয়মিত রিকশা চালানোর ফলে তার পর্যাপ্ত ব্যায়াম হয়ে যায়।
খেলাধুলা করার মাধ্যমে ব্যায়ামঃ
নিয়মিত খেলাধুলা করলে শরীরের ব্যায়াম হয়ে থাকে, খেলাধুলার মধ্যে ফুটবল খেলা, ক্রিকেট খেলা, হাডুডু খেলা, ভলিবল খেলা, ব্যাডমিন্টন খেলা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এই সমস্ত খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরে পর্যাপ্ত ব্যায়াম হয়ে যায়।
পায়ে হাটার মাধ্যমে ব্যায়ামঃ
যারা কৃষিকাজ এবং খেলাধুলার মাধ্যমে ব্যায়াম করার পরিবেশ পান না, তারা প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে অথবা তিন থেকে চার কিলোমিটার জোরে জোরে হাটলে প্রয়োজনীয় ব্যায়াম হয়ে যায়। এটি একটি ভালো ব্যায়াম।
সাঁতার কাটার মাধ্যমে ব্যায়ামঃ
পানিতে সাঁতার কাটা শরীরের জন্য একটি সর্বোত্তম ব্যায়াম। তবে অনেকেই প্রয়োজনীয় পরিবেশ না পাওয়ার জন্য পানিতে সাঁতার কাটার সুযোগ পান না। সাঁতারের মাধ্যমে শরীরের প্রতিটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের প্রয়োজনীয় ব্যায়াম হয়ে যায়।
চোখের ব্যায়ামঃ
চোখের ব্যায়াম করলে দৃষ্টিশক্তি এবং দৃষ্টির সমস্যা গুলি নিরাময় হওয়ার ক্ষেত্রে বেশ ভূমিকা রাখে। চোখের ব্যায়াম নিয়মিত করলে চোখের চাপের লক্ষণ গুলি উপশম করতে পারে এবং আপনার দৃষ্টি ক্ষমতা উন্নত করতে পারে। দৃষ্টিশক্তি স্থায়িত্ব করার ক্ষেত্রে ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা একমত হয়েছেন চলুন দেখে নেই কিভাবে চোখের ব্যায়াম করা যায়।
হাটুর ব্যায়ামঃ
আজকাল হাঁটুর ব্যথায় প্রায় অনেকেই কষ্ট পেয়ে থাকেন। ৩০ বছর পার হলেই অনেকেরই হাঁটুর ব্যথা শুরু হয়ে যায়। বিশেষত ক্যালসিয়াম এর অভাব, দীর্ঘ সময় বসে থেকে কাজ করলে, এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে, হাঁটুর ব্যথা শুরু হলে ডাক্তারি চিকিৎসায় কিছুটা আরাম বোধ করলেও পুরোপুরি সুস্থ হওয়া যায় না, তবে নিয়মিত ব্যায়াম করলে ভালো থাকা যায়।
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
কোমরের ব্যথায় কমবেশি প্রায় সকলে ই কষ্ট পেয়ে থাকেন। চল্লিশ বছর বয়স হলেই সাধারণত কোমর ব্যথা শুরু হয়ে থাকে। যারা অফিসে বসে ডেস্ক ওয়ার্ক করেন তাদের এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে, কোমর ব্যথাকে ব্যাক পেইন ও বলা হয়ে থাকে। কোমর ব্যথা কমানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিও অনুসরণ করা যায় যেমন-
- নারিকেলের তেল এর সাথে কর্পূর মিশিয়ে গরম করতে হবে, পরে ঠান্ডা করে নিয়ে কোমরে বা ব্যথাস্থানে মালিশ করলে কোমর ব্যথা কম অনুভূত হবে।
- কোমর ব্যথা বা ব্যাক পেইন কমানোর জন্য নীলগিরি তেল ব্যবহার করা যায়।
- ব্যথাস্থানে দিনে অথবা রাতে দুই থেকে তিনবার গরম শেক দিলে, অনেকটাই উপকার পাওয়া যায়।
- সরিষার তেলের সাথে কয়েকটি রসুনের কোয়া মিশিয়ে গরম করে নিয়ে পরবর্তীতে ঠান্ডা করে ব্যথায় স্থানে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।
- গরম দুধে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে পান করলে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- আদা একটি এন্টিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে এই ক্ষেত্রে আদা চা ব্যথা সারানোর জন্য ভালো একটি খাবার।
- লবঙ্গ পিষে গুড়া করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ব্যথা স্থানে মালিশ করলে ব্যথা কমে যাবে।
- কোমর ব্যথা রোধ করার জন্য এক বিশেষ ধরনের বেল্ট পাওয়া যায়, কোমরে বেল্ট ব্যবহার করলে ব্যথা থেকে দূরে থাকা যায়।
- কোমরে ব্যথা হলে শোয়ার সময় কোমরের নিচে বালিশ ব্যবহার করলে ব্যাথা থেকে কিছুটা হলেও উপকার পাওয়া যায়।
ব্যায়াম করার মাধ্যমে কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা
কোমর ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত। তবে চিকিৎসায় পুরোপুরি একেবারে সুস্থ হয়ে ওঠেনা। এক্ষেত্রে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা করানো উচিত পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম রয়েছে এ সকল ব্যায়াম নিয়মিত করলে অনেকটাই সুস্থ থাকা সম্ভব। ব্যায়াম করার বিভিন্ন কৌশল নিম্নে প্রদর্শন করা হলো-
মহিলাদের কোমর ব্যথার ব্যায়াম
যে সমস্ত ব্যায়াম মহিলারা সহজেই করতে পারেন সেগুলোর মধ্যে উপকারী এবং উল্লেখযোগ্য হল-
মন্তব্য,
পরিশেষে বলা যায় যে, কোমর ব্যথা একটি মারাত্মক ব্যাধি। কোমর ব্যথা শুরু হলে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ সাপেক্ষে ঔষধ সেবন করা উচিত, কি অবস্থা গো তবে এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ব্যায়াম করলে অনেকটাই সুস্থ থাকা সম্ভব। তাই আমাদের সকলেরই উচিত ব্যায়াম করার যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে নিয়মিত ব্যায়াম করা। ব্যায়ামের মাধ্যমে সহজেই শরীরকে সুস্থ রাখা সম্ভব।
Hasi Online IT নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url