ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভূমিকা
প্রিয় পাঠক, ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভূমিকা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টায় রয়েছেন, কিভাবে নিজের ক্যারিয়ারকে বিল্ড আপ করা যায়, ক্যারিয়ার গঠনে গুণ ও দক্ষতা, এগুলো সম্পর্কে গুগলে সার্চ করেও তেমন মনমত তথ্য পাচ্ছেন না? তাহলে আপনার জন্য এই প্রতিবেদনটি, কারণ এতে এ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
আমার এই প্রতিবেদনের মধ্যে ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির, ক্যারিয়ার শিক্ষা, কেরিয়ার গঠনে গুণ ও দক্ষতা, উন্নত ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত, এগুলো তথ্য সহ আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনা করা হয়েছে, চলুন এগুলো দেখে নিই
ভূমিকা
জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে, আদর্শ পরিবার গঠনে ভূমিকা রাখতে হলে,দেশ গঠনের বা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে হলে, নিজের ক্যারিয়ার গঠনে যত্নবান হতে হবে। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ক্যারিয়ার গঠনে মূল হাতিয়ার। দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে চিন্তার ধরন, মানসিকতা এবং মনোভাব অর্থাৎ কোন বিষয়কে কোন ব্যক্তি
কিভাবে দেখবে, কিভাবে গ্রহণ করছে সেটি হল তার দৃষ্টিভঙ্গি। আর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি হলো কোন মানুষের পজেটিভ চিন্তাধারা বা মানসিকতা মাধ্যমে গ্রহণ।
ক্যারিয়ার শিক্ষা
ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভূমিকা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের আগে জেনে নেওয়া দরকার ক্যারিয়ার শিক্ষা কি? কোন ব্যক্তি তার একাডেমিক শিক্ষা, বাস্তব অভিজ্ঞতা, নিজের দক্ষতা, আন্তরিকতা, মানসিকতা ইত্যাদি বিষয়গুলোর সমন্বয়ে যে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে যা, বাস্তব জীবনের জীবনযাত্রার মান উন্নতির দিকে ধাবিত হয়।
ক্যারিয়ার গঠনে গুণ ও দক্ষতা
ক্যারিয়ার গঠনে জন্য ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনা করতে গেলে প্রথমে ক্যারিয়ার গঠনের গুণ ও দক্ষতা সম্পর্কে জেনে নিই। ভবিষ্যৎ জীবনে নিজেকে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে হলে এবং পরিবার সমাজ ও দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য, নিজের ক্যারিয়ার গঠন করা অত্যন্ত জরুরী।
আরো পড়ুন ঃ বেকারত্ব জীবন দূর করতে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করুন
যদি কেউ ক্যারিয়ারকে ভালোভাবে গঠন করতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই কিছু গুণ ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ক্যারিয়ার গঠনে গুণ ও দক্ষতার সম্পর্কিত কিছু প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিঃ
মানুষের জীবনের সাফল্যের একটি অদৃশ্য উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা যায় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে। মানুষ তার জন্মের পর থেকেই বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা, অনুকূল ও প্রতিকূল অবস্থা দেখে আসছে। এর মাধ্যমে একটা দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়, একজন মানুষ তার দৃষ্টিভঙ্গি নির্ভর করে
সে কোন পরিবেশে শিক্ষা পাচ্ছে কোন পরিবেশে বেড়ে উঠছে কোন সাংস্কৃতি লালন করছে এগুলোর উপর নির্ভর করেই।ক্যারিয়ার গঠনে গুণ ও দক্ষতা এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি।
ক্যারিয়ার গঠনে আত্মসচেতনতাঃ
আত্মসচেতনতা বলত বোঝায় নিজের ভিতরে প্রলুব্ধ জ্ঞান দ্বারা নিজের প্রতি সচেতন হওয়া। কোন কাজ ভালো, কোন কাজ মন্দ, সেই বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখা। কোন কাজের ব্যাপারে এর ফলাফল কি হতে পারে, ইতিবাচক হবে, না নেতিবাচক হবে, এর কোন ক্ষতিকর প্রভাব আছে কিনা এ সমস্ত বিষয়ের নিজের উপলব্ধকৃত জ্ঞানই আত্মসচেতনতা। এই আত্মসচেতনতা মানুষের উন্নত ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
ক্যারিয়ার গঠনে আত্মবিশ্বাসঃ
আত্মবিশ্বাস হল নিজের ক্যারিয়ার গঠনে গুণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। তবে আত্মবিশ্বাস হওয়ার ক্ষেত্রে নিজের সামর্থ্য ও শক্তি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখতে হবে। যাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে, তারা সহজে ভালো ক্যারিয়ার গঠন করতে
পারে না। আত্মবিশ্বাস সবসময়ই সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সহায়তা করে। আত্মবিশ্বাস না থাকলে যে কোন ব্যক্তি হতাশায় পড়তে পারেন। আত্মবিশ্বাস থাকলে সহজেই সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায় এবং তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও এক ধাপ এগিয়ে থাকে।
ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভূমিকাঃ
জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে হলে আমাদের প্রথমে ক্যারিয়ার গঠন করতে হবে। ক্যারিয়ার গঠনে গুণ ও দক্ষতা এর মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি একটি উল্লেখযোগ্য মনোভাব। এর মাধ্যমেই জীবনের সফলতা অর্জন করা অধিকাংশই সহজ হয়ে যায়, চলুন আমরা জেনে নিই, ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভূমিকা গুলোঃ
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সু-সম্পর্কঃ
যে কোন মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা মানবিক গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম। প্রতিটা মানুষের ক্ষেত্রে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতে পারলে খুব সহজেই এই গুণাবলী টি অর্জন করা সম্ভব। সু- সম্পর্ক গঠনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে উন্নত ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণঃ
অনেকেই ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার নিয়ে বেশ চিন্তিত থাকেন, ফলে তার মানসিক অবস্থার উপরে চাপ সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষেত্রে যদি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করা যায় তাহলে অনেক মানসিক চাপ কমে যায়, অতএব বলা যায় মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গের মাধ্যমে এবং উন্নত ক্যারিয়ার গঠন করতে পারে।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বিপদ থেকে রক্ষাঃ
যেকোন বিপদে পতিত হলে সহকর্মীদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় থাকলে, অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আর ইতিবাচক মনোভাবই বা দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সুতরাং বলা যায় যে এটি একটি ক্যারিয়ার গঠনে দারুন সহায়ক।
আরো করুন ঃ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম সমূহ
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি উৎসাহ ও মনোযোগঃ
উৎসাহ ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গের ফলে কোন কাজকে কেউ ছোট মনে করে না বা হীনমন্য মনে করেনা ফলে ব্যাপক উদ্দিপনা ও আগ্রহ ভরে কাজগুলো করতে পারে এবং সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারে। সুতরাং বলা যায় ক্যারিয়ার গঠনে উৎসাহ ও মনোযোগ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভূমিকা পালন করে থাকে।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সমস্যার সমাধানঃ
কোন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখযোগ্য। নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, সমস্যার সমাধানের পথে এগিয়ে না এসে আরও জটিল করে তোলে। সমস্যার সমাধান করতে পারলে উন্নত ক্যারিয়ার গঠন করা সম্ভব।
ক্যারিয়ার গঠনে কি কি গুন ও দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজনঃ
ক্যারিয়ার গঠনে জন্য ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনার ক্ষেত্রে এইবার দেখে নেই কিভাবে কোন কোন দক্ষতা অর্জন করলে ক্যারিয়ার গঠনের সহায়ক হওয়া সম্ভব।প্রত্যেকটা মানুষই ছোট থেকে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য পরিকল্পনা করে থাকে। ক্যারিয়ার গঠন সঠিকভাবে করতে পারেনা অনেকেই, যারা সুস্থ পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে পারে তারাই উন্নত ক্যারিয়ার গঠন করতে সক্ষম হয়।
ক্যারিয়ার গঠনে নিজেকে নিয়ে গবেষণাঃ
কোন ব্যক্তি তার ক্যারিয়ার গঠনের শুরুতেই দিতে হবে সে কি হতে চায় কি ধরনের কাজ করতে চায়, সেগুলোর উপর ভিত্তি করে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য গবেষণার মাধ্যমে সঠিক পরিকল্পনা খুঁজতে হবে।
ক্যারিয়ার গঠনে সফল মানুষদের অনুসরণ করাঃ
যারা বিভিন্ন অনুকূল ও প্রতিকূল অবস্থার সাথে প্রতিনিয়ত লড়াই করে বড় হয়েছেন বা সফল হয়েছেন, তাদের পথ অনুসরণ করে নিজের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য বাস্তবে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করতে হবে।
ক্যারিয়ার গঠনে অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণঃ
যারা সফল হয়েছেন যারা উন্নত ক্যারিয়ার গড়েছেন, তাদের কাছ থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে,এটি পরবর্তী প্রজন্মকে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে।
ক্যারিয়ার গঠনে মানসিকভাবে প্রস্তুতিঃ
ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে অবশ্যই ছোট থেকেই মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। কোন সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া যাবে না। ছাত্র জীবন থেকে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
ক্যারিয়ার গঠনে কৌশলী হতে হবেঃ
সময়ের সাথে সাথে এবং তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নের সাথে সাথে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়। যার জন্য আমাদের উপযোগী কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। পারফেক্ট কৌশলী হতে পারলে ক্যারিয়ার গঠনে ক্ষেত্রে খুব সহজ হবে।
ক্যারিয়ার গঠনে নিজেকে স্মার্ট তৈরি করাঃ
ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজেকে স্মার্ট হিসেবে তৈরি করতে হবে। যেমন কথা বলার মার্জিত ভাষাগত জ্ঞান, সময়োপযোগীর পোশাক পরিধান, ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার।
মন্তব্য
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ক্যারিয়ার গঠনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভূমিকা অপরিসীম। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় উন্নত ক্যারিয়ার গঠন করতে সক্ষম হয়। উপরের আলোচনা থেকে আমরা এ বিষয়ে সংক্রান্ত যথাযথ তথ্য পেয়েছি বলে মনে হয়েছে।
আমার এই প্রতিবেদনটি আপনার ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করবেন, তাহলে অন্যরা জানার সুযোগ পাবে। এতক্ষণ ধরে এই প্রতিবেদনটি ধৈর্যের সহিত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Hasi Online IT নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url