বেকারত্ব জীবন দূর করতে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করুন
আপনি উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করে বেকারত্ব জীবন দূর করার কথা ভাবছেন, কিভাবে বেকার জীবন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়,বেকারত্ব দূর করতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, কিভাবে উদ্যোক্তা হয়ে আই ইনকাম যায় এ সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে অনলাইনে সার্চ করেও যথাযথ তথ্য পাচ্ছেন না, তাহলে আপনার জন্য এই প্রতিবেদনটি অতি প্রয়োজনীয়।
আমার এই প্রতিবেদনের মধ্যে বেকারত্ব দূর করতে উদ্যোক্তা তৈরি হয়ে ইনকাম করার বিভিন্ন পদ্ধতি সমূহ, বেকারত্বের সমস্যা, উদ্যোক্তা কি, কিভাবে উদ্যোক্তা হওয়া যায়,সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। চলুন এবার আমরা বিস্তারিত জেনে নিই-
ভূমিকা
বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক, দিন দিন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, কিন্তু সে তুলনায় সরকারি চাকরি পরিমান খুবই কম, তাছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নের ফলে অল্প সংখ্যক লোক দিয়ে অধিক পরিমাণে কাজ করায় কর্মসংস্থানের পরিমাণ তুলনামূলক বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
বিভিন্ন চাকরির পিছনে চেষ্টা না করে সময় না দিয়ে যদি উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের স্কিল তৈরি করে, অভিনব কায়দা কৌশল আবিষ্কার করে, দ্রুত সেবা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে একজন সফল উদ্যোক্তা তৈরির মানসিকতা নিয়ে কাজ করে উদ্যোক্তা হতে পারলে বেকারত্ব দূরীকরণ করা সম্ভব।
বেকারত্বের সমস্যা
বেকারত্ব সমাজের একটি অভিশাপ বলা যায়, বেকার জীবন মানে একটি দুর্বিসহ জীবন। প্রতিবছর যেভাবে শিক্ষিত সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে সেভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়ার ফলেই বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
- জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
- অর্থনীতির দুর্বলতা।
- মূলধনের অভাব।
- দক্ষ কারিগরি শিক্ষার অভাব।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
- রাজনৈতিক অস্থিরতা।
- কৃষি নির্ভর অর্থনীতি।
- দুর্নীতি।
- বিভিন্ন কারণে কুটির শিল্প ধ্বংস কর্মীর অভাব।
- উদ্যোক্তার অভাব।
- সঠিক পরিকল্পনার অভাব, ইত্যাদি।
উদ্যোক্তা কি
উদ্যোক্তা হল সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মালিক, যিনি ব্যবসায়ী চালানো এবং আর্থিক কার্যক্রম নিজেই পূর্ণ দায়িত্ব নেয়। উদ্যোক্তা হলে তিনি নতুন ব্যবসা আরম্ভ করতে পারেন, ব্যবসা চালাতে পারে অথবা নিজের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান স্থাপনা করতে পারে। তাদের দায়িত্বে চালানো, নতুন আইডিয়া বা প্রয়োজনীয় সম্পদ উৎপাদন,আর্থিক নৈতিকতা, এবং ব্যবসা পরিচালনার সমস্যা সমাধানে তাদের প্রধান ভূমিকা থাকে।
বেকারত্ব জীবন দূর
বেকারত্ব জীবন দূর করতে আমাদের অবশ্যই পরিশ্রমই হতে হবে। সততা ও নিষ্ঠার সহিত একজন ভালো উদ্যোক্তা হতে হবে। একজন ভালো উদ্যোক্তা হয়ে শুধু নিজের বেকারত্ব দূর করা যায় না, সাথে সাথে আরও কিছু বেকার সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়।
বেকার জীবন দূর করতে হলে আমাদের সঠিক পরিকল্পনা দরকার হয়। একজন ভালো উদ্যোক্তা হতে গেলে তাকে বিশ্লেষণ দক্ষতা অর্জন করতে হয়। গতানুগতিক ব্যবসা-বাণিজ্য গুলোকে কিভাবে মডিফাই করে দ্রুত ইনকাম করা যায় সেগুলো নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা করতে হবে।
উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম
প্রচলিত ব্যবসা-বাণিজ্য কে আধুনিকায়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায় এবং আই ইনকাম বাড়ানো যায়। বিভিন্ন সেক্টরে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ রয়েছে, নিম্নে কতিপয় বিষয় উল্লেখ করা হলোঃ
ইনকামের পদ্ধতি ফ্রিল্যান্সিংঃ
ফ্রিল্যান্সার হয়ে ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করা যায়। আপনি যদি কোন বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন কিংবা নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে একটি স্কিল তৈরি করতে পারেন, তবে উদ্যোক্তা হয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ইনকাম করে বেকারত্ব দূর করতে সক্ষম হবেন।
বর্তমান বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেমন-ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ইউটিউব ফেসবুক মার্কেটিং, লোগো তৈরি ইত্যাদি। এ সমস্ত বিষয়ে উদ্যোক্ত হয়ে ইনকাম করা খুব সহজ।
ইনকামের পদ্ধতি ক্ষুদ্র ব্যবসাঃ
বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ব্যবসা করে নিজের সৃজনশীলতা দিয়ে ডেভেলপ করে উদ্যোক্তা হওয়া যায় এবং এখান থেকে সম্মানজনক ইনকাম করা সম্ভব। ক্ষুদ্র ব্যবসার মধ্যে রয়েছে মুদি দোকান, কাপড়ের দোকান,জুতা স্যান্ডেলের দোকান, অনলাইন ব্যবসা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ইত্যাদি।
ইনকামের পদ্ধতি ক্ষুদ্র শিল্পঃ
বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরি করে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করা যায়। এবং বেকার জীবন দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই ধরনের শিল্পের মধ্যে রয়েছে-জুতা স্যান্ডেল তৈরি কারখানা, মোমবাতি তৈরি কারখানা, সাবান তৈরি কারখানা, ডিটারজেন্ট তৈরির কারখানা ইত্যাদি।
ইনকামের পদ্ধতি কুটির শিল্পঃ
কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরি করে আধুনিকায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি করে দ্রুত সার্ভিস প্রদান করার মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। কুটির শিল্পের মধ্যে-রান্নার বাসনপত্র তৈরি, বেতের টেবিল চেয়ার তৈরি, কাঠের আসবাবপত্র তৈরি, কাঠের বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হওয়া যায় এবং ইনকাম করা যায়।
ইনকামের পদ্ধতি ইন্ডাস্ট্রি কারখানাঃ
এক্ষেত্রে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করা যায়। যেমন গার্মেন্টস কারখানা তৈরি, সিমেন্ট কারখানা তৈরি, আলু রাখার কোল্ড স্টোরেজ, রং কারখানা তৈরি, টিন কারখানা তৈরি ইত্যাদি।
ইনকামের পদ্ধতি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানঃ
বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে সম্পর্ক রেখে তাদের এজেন্ট নিয়ে মোবাইল এজেন্ট ব্যাংকিং তৈরি করার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করা যায়। এবং বেকার জীবন দূর করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে এখন মোবাইল ব্যাংকিং একটা জনপ্রিয় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সর্বোপরি বলা যায়, নিজের দক্ষতা অভিজ্ঞতা সৃজনশীলতা এগুলো কাজে লাগিয়ে গতানুগতিক ব্যবসা-বাণিজ্যকে আধুনিকায়ন করার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করে বেকারত্ব দূর করতে সবাইকে সশস্ত্র থাকতে হবে। নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করাই একটা ভালো উদ্যোক্তার দৃষ্টিভঙ্গি।
বেকারত্ব জীবন দূর করতে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করুন
বেকারত্ব থেকে বেরোতে উদ্যোক্তা হয়ে ব্যবসা চালানোর একটি উৎকৃষ্ট পথ হতে পারে। বেকারত্ব জীবন থেকে বের হতে এবং আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন করতে উদ্যোক্তা হওয়া একটি নির্ভরযোগ্য উপায়। বেকারত্ব জীবন দূর করতে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করার কিছু পদক্ষেপ নিম্নরূপঃ
উদ্যোক্তার মাধ্যমে ব্যবসা আইডিয়া উদ্ভাবনঃ
আপনি যেকোন বিষয় নিয়ে চিন্তা করুন, যেখানে আপনার দক্ষতা এবং আগ্রহ আছে, এবং সেটি একটি ব্যবসা আইডিয়া বা প্রকল্পে পরিণত করুন।
উদ্যোক্তা হয়ে ব্যবসা পরিকল্পনাঃ
একটি ব্যবসা পরিকল্পনা তৈরি করুন, যা আপনার ব্যবসার লক্ষ্য, লক্ষ্য গ্রহণ, আর্থিক পরিচালনা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান এবং বুদ্ধি স্থিরতা সহ সব জিনিস ব্যক্ত করুন।
উদ্যোক্তার মাধ্যমে ব্যবসার যোগ্যতাঃ
আপনার ব্যবসা আইডিয়াটি ব্যবসা যোগ্যতা আরোপ করা দরকার এবং এটি বাস্তবায়ন করার জন্য আপনার প্রকৌশল প্রগতি এবং আইডিয়ার সাথে মিশিয়ে এবং উন্নত করা দরকার।
ইনকামের পদ্ধতি ব্যবসা শ্রেণীঃ
আপনার ব্যবসার প্রশাসন, নিয়োগ,বাজার বিপণন নিয়োগ সম্মেলন এবং প্রচারণে আপনার ব্যবসা এবং আইডিয়া স্থাপন করতে সাহায্য করতে পারে/
উদ্যোক্তা হয়ে নেটওয়ার্ক গড়াঃ
ব্যবসার যোগ্য সংগঠন ব্যবসা মেলা এবং নেটওয়ার্কিং মৌলিক সম্পর্ক তৈরি করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নির্ভরযোগ্যতাঃ
আপনার ব্যবসা প্রকৌশল এবং সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করতে উপযুক্ত প্রশাসন ও কর্মচারী নিয়োগ করুন।
এই পদক্ষেপগুলোর সাথে সম্পৃক্ত এবং পরিশ্রমণশীল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বেকারত্ব জীবন থেকে উদ্যোক্ত হওয়ার সময় নিয়মিত চ্যালেঞ্জ এবং সফলতা অর্জনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
মন্তব্য
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, বেকারত্ব জীবন দূর করতে উদ্যোক্তা হয়ে ইনকাম করার ক্ষেত্রে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে. চাকরির পেছনে অতিরিক্ত সময় না দিয়ে নিজের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরি হতে হবে। এর ফলে,যেমন দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড অবদান রাখা যাবে অপরপক্ষে বেকারত্ব দূর করা যাবে।.
এই প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন, এতক্ষণ ধরে আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে এই প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।।
Hasi Online IT নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url