হোমিওপ্যাথিক ও এলোপ্যাথিক দুইটি ঔষধ একসঙ্গে খেলে কি হয়
প্রিয় পাঠক,হোমিওপ্যাথিক ও এলোপ্যাথিক দুইটি ঔষধ একসঙ্গে খেলে কি হয়,হোমিওপ্যাথিক খেলে কি এলোপ্যাথিক খাওয়া যায়, এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথি এর পার্থক্য, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিজিট করেও এ সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না? তাহলে এ প্রতিবেদনটি আপনার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রতিবেদনের মধ্যে এগুলো খুব সুন্দর করে আলোচনা করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনের মধ্যে হোমিওপ্যাথি ও এলাপতি একসঙ্গে কি খাওয়া যায়, এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথি এর পার্থক্য,এছাড়াও হোমিওপ্যাথি ওষুধ কি আসলেই কাজ করে, হোমিওপ্যাথি ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, হোমিও ওষুধ খেলে কি কি খাওয়া যায় না,এগুলো সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি , চলুন সেগুলো জেনে নিই।
ভূমিকা
হোমিওপ্যাথিক, এলোপ্যাথিক দুইটি একসঙ্গে খাওয়া যায় এই তথ্যটি জানার আগে কিছু প্রারম্ভিক তথ্য জেনে নিই। হ্যানিম্যান প্রায় ১৮ শতকের শেষের দিকে মূলধারার ঔষধগুলো যৌক্তিক নয় এবং অগ্রহণযোগ্য হিসাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কারণ এটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর ছিল না এবং প্রায়শই ক্ষতিকারক ছিল।
হ্যানিম্যান অল্প মাত্রায় একক ওষুধ প্রয়োগের পক্ষে ছিলেন এবং জীবিত প্রাণীরা কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে একটি নিরপেক্ষ, প্রাণবন্ত দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করেছিলেন। চিকিৎসা এবং পর্যাপ্ত বিশ্রামের ফলাফলটি মূলধারার ঔষধের চেয়ে সাধারণত হোমিওপ্যাথির শুরু হওয়ার সময় প্রচলিত ছিল।
হোমিওপ্যাথিক (Homeopathy)
হোমিওপ্যাথিক ও এলোপ্যাথিক দুইটি ঔষধ একসঙ্গে খেলে কি হয় এই তথ্যটি জানার আগে হোমিওপ্যাথিক সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা দরকার। বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির আরেক নাম হল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি। জার্মান চিকিৎসক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেন ১৭৯৬ সালে।
হোমিওপ্যাথ চিকিৎসকরা বিশ্বাস করেন, যে পদার্থ একজন সুস্থ মানুষকে অসুস্থ করে তোলে সে একই পদার্থ অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে তুলতে সক্ষম। এই মতবাদটিকে বলা হয় 'সদৃশ সদৃশ্য আরোগ্য করে' । হোমিও ওষুধ খেয়ে রেমেডি বলা হয়। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ কে বিভিন্নভাবে ডায়ালেশন করে প্রস্তুত করা হয় এই ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত রাসায়নিক দ্রবণীয় কে মিক্সার করে আলাদা না করা যায়।
এলোপ্যাথিক (Allopathic)
এবার এলোপ্যাথিক ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিই। এলোপ্যাথি একটি প্রাচীন শব্দ হলেও বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং বহুল ব্যবহৃত ও প্রকৃত একটি পদ্ধতি। এলাপতি শব্দটি বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এলোপ্যাথি ওষুধ গুলো দ্রুত কার্যকর এবং রোগ মুক্তির ক্ষেত্রে দ্রুত আরোগ্য লাভ করে তবে একথা স্বীকার করতেই হবে যে এই ওষুধটির ক্ষেত্রে বেশ কিছু সাইড ইফেক্ট লক্ষ্য করা গেছে।
হোমিওপ্যাথি ওষুধে দ্রুত কাজ না করার জন্য এলোপ্যাথি ওষুধ তৈরি হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন ধরনের অনুশীলন এর ফলেই বর্তমানের এই আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি হলো এলোপতি। সারা বিশ্বে এই এলাপতি পশুদের প্রয়োগের পদ্ধতি সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে।
“যদিও অনেক আধুনিক থেরাপিকে অ্যালোপ্যাথিক যুক্তির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বোঝানো যেতে পারে (যেমন, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য একটি রেচক ব্যবহার করে), স্ট্যান্ডার্ড মেডিসিন কখনই এলোপ্যাথিক নীতির প্রতি আনুগত্য দেয়নি” এবং “অ্যালোপ্যাথ” লেবেলটিকে “অত্যন্ত উপহাসমূলক বলে মনে করা হয়েছিল।
হোমিওপ্যাথি কি আসলেই কাজ করে
ডা. স্যামুয়েল হ্যানিম্যান তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক। তিনি সর্বপ্রথম এলোপতি চিকিৎসা নিয়ে পড়ালেখা করেন ও গবেষণা করেন এবং এলোপতি চিকিৎসা পদ্ধতি অনুযায়ী রোগীদের চিকিৎসা করে থাকতেন।
হ্যানিম্যান এলোপতি চিকিৎসা করার পাশাপাশি বিভিন্ন চিকিৎসা বিজ্ঞানের বই অনুবাদ করতেন ও গবেষণা করতেন। একসময় এলোপ্যাথি চিকিৎসার বিভিন্ন ক্ষতিকর সাইড ইফেক্ট লক্ষ্য করেন। এবং এলোপ্যাথি চিকিৎসা বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এলোপ্যাথি ওষুধের ক্ষতিকর দিক গুলো গবেষণা করে তার প্রতিকারস্বরূপ হোমিওপ্যাথি ওষুধের আবিষ্কার করেন।
মূলত পেরুভিয়ান কফি বা সিঙ্কোনা গাছের বাকল এর উপকারিতা গুলো নিয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞান থেকেই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার উদ্ভব হয়েছে। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে দেখা যায় মানব দেহে পরীক্ষামূলক ঔষধ প্রয়োগ শুরু হয় ১৭৯০ সাল থেকে।
হোমিওপ্যাথি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথি এর পার্থক্য এটি জানার জন্য হোমিওপ্যাথি ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা জেনে নিই।ওষুধ মাত্রই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত। কোনো ওষুধই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত নয়। চিকিৎসকই ভালো জানেন, কোন ওষুধে কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে। এরকম অবস্থায় ওষুধ সেবন
বন্ধ রেখে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কোন ঔষধ মানুষের শরীরে কি পরিমানে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় তা প্রয়োগের আগে বোঝা যায় না। চিকিৎসক ক্ষতির চেয়ে উপকার বেশি হয়- এরূপ পরিস্থিতিকে বিবেচনা করে ওষুধ নির্বাচন করেন।কিছু কিছু ওষুধ নির্বাচনে পরিস্থিতিগত কারণে বিকল্প
থাকে না। সেক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে প্রশমিত করে নিতে হয়। একেক ওষুধ একেক দেহে একেক রকম মাত্রায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখায়। যেমনঃ কেউ সিপ্রোফ্লক্সাসিন সহ্য করতে পারে; কিন্তু লিভোফ্লক্সাসিন সহ্য করতে পারে না। কেউ লিভোফ্লক্সাসিন সহ্য করতে পারে; কিন্তু মক্সিফ্লক্সাসিন সহ্য হয় না।
আবার অনেকেই সেফ্রাডিন সহ্য করতে না পারলেও স্পারফ্লক্সাসিন ঠিকই সহ্য করে। কোন কোন ক্ষেত্রে কোন রোগীর প্যারাসিটামল খেলে পাকস্থলী থেকে রক্তক্ষরণ হয়, আবার কোন কোন রোগীর ন্যাপ্রোক্সেন জাতীয় ব্যথার ওষুধ খেয়ে ও কিছু হয় না। কাজেই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কোনো চিকিৎসকের ওষুধ নির্বাচনে অযোগ্যতা নয়, পরিস্থিতির বিরূপতা মাত্র।
এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথি এর পার্থক্য
হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথিক পদ্ধতি দুইটি রোগ ভালো করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকলেও কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথি এর পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। এলোপ্যাথিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক রোগী খুব দ্রুত ভালো হয়ে যায়। কিন্তু ৫০% ক্রমিক রোগ এলাপাতিক চিকিৎসায় ভালো হয় না। অনেক রোগের ক্ষেত্রেই ও তরুণ রোগের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি বেশ ভালো কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
২। এলাপাতিক ওষুধ গ্রহণ করলে বিভিন্ন ধরনের সাইড ইফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যেমন ব্যথার ওষুধ অতিরিক্ত সেবন করলে কিডনির সমস্যা হতে পারে কিন্তু এই ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি ওষুধ সেবন করলে এ ধরনের কোন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
৩। বহু রোগ রয়েছে যেগুলির মূলত কোন এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেই। সেসব ক্ষেত্রে এলোপ্যাথিক ডাক্তাররা সাধারণত অনুমানের ওপর চিকিৎসা দিয়ে থাকে, তাই রোগ কিছুটা কমলে একেবারে রোগ কখনই সারে না,যেমন – আইবিএস, পাইলস, ফিস্টুলা, ভেরিকোসিল, স্পার্মাটোসিল ইত্যাদি ইত্যাদি। অন্যদিকে, সার্জারী বহির্ভুত ৯০% রোগের চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি একাই কভার করে যা একক ভাবে অন্যকোন চিকিৎসা পদ্ধতি করতে পারে না।
৪। এলোপ্যাথিক ঔষধ সাধারণত ইঁদুর বানর শিল্পানজি এই সমস্ত ইতর শ্রেণীর জীবজন্তুর উপর পরীক্ষা করে। এর ফলে মানব শরীরে বহু সাইড ইফেক্ট তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে, হোমিও ঔষধ মানব শরীরে কোন ক্ষতি করে না এবং নিয়ম অনুযায়ী ঔষধ সেবন করলে সমস্ত রোগ সেরে যায়।
৫। এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রের নিজস্ব কোন আইনকানুন বা নিয়ম কানুন নেই। প্রতিনিয়ত গবেষণা করে করে এলোপ্যাথি দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে । অন্যদিকে, হোমিওপ্যাথির নিজস্ব সংবিধান এবং ঔষধের প্রয়োগ প্রণালী রয়েছে। ২০০ বছর আগে যে ঔষধটি যেভাবে ফল দিতো আজও সেই হোমিও ঔষধটি সেভাবেই ফল দিচ্ছে।
৬। এলোপ্যাথিক ঔষধের সংখ্যা অনেক কম। অন্যদিকে, হোমিওপ্যাথির যতগুলো ঔষধ রয়েছে তার এক চতুর্থাংশ ঔষধও এলোপতি পদ্ধতিতে আজ পর্যন্ত আবিস্কার করতে পারেনি।
হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেলে কি কি খাওয়া যায় না
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা একটি প্রাকৃতিক নির্ভরশীল এবং শক্তিশালী চিকিৎসা পদ্ধতি যা একসাথে অনেক রোগকে সারাতে পারে।কিন্তু আপনি যখন হোমিওপ্যাথি কোন চিকিৎসার আওতায় থাকেন, তখন কিছু খাবারের ওপর বিধি নিষেধ দেওয়া হয়ে থাকে। হোমিওপ্যাথি ওষুধ গ্রহণের পর এক থেকে দুই ঘন্টা সময় পরে সব ধরনের খাবার খেতে তেমন কোন বাধা নেই।
কিছু রোগের ক্ষেত্রে হোমওপ্যাথি ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে নির্মূল হলেও, কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো এই রোগ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। হোমিওপ্যাথি ওষুধে ভালো ফলাফল পেতে হলে কিছু কিছু খাদ্য বর্জন করতে হবে যতদিন না রোগমুক্ত হওয়া যাচ্ছে। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণকালীন সময়ে কোন কোন রোগের জন্য কি কি খাওয়া নিষিদ্ধ তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা- যখন শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হবে (যেমন সর্দি-কাশি) তা প্রতিরোধের জন্য হোমওপ্যাথি ঔষধ গ্রহণ করলে কোল্ড ড্রিংক্স, আইসক্রিম এবং অন্যান্য ঠাণ্ডা খাবার গুলো খাওয়া যাবে না।
ত্বকের সমস্যা- ত্বকের সমস্যার ক্ষেত্রে আপনাকে মশালাদার খাবার বা কৃত্রিম ধরণের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। আমিষ এবং মসলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চললে হোমিওপ্যাথি ওষুধ ব্যস দ্রুত কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে।
হোমিওপ্যাথিক খেলে কি এলোপ্যাথিক খাওয়া যায়
হোমিওপ্যাথিক ও অ্যালাপথিক দুইটি ওষুধ একত্রে খেলে কি হয় এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়,হোমিওপ্যাথি ও এলোপতি চিকিৎসার পরিপূরক হতে পারে । দীর্ঘদিন ধরে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ সেবন করলে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করা ঠিক নয়। এই ধরনের ক্ষেত্রে, আপনার হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার আপনাকে অ্যালোপ্যাথির পাশাপাশি হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা শুরু করার পরামর্শ দেবেন।
আমার পূর্বেই এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথি এর পার্থক্য জেনেছি। হোমিওপ্যাথি ও অ্যালোপ্যাথি ওষুধ একসঙ্গে খেতে গেলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। হোমিও ওষুধ এবং এলাপতি ওষধ দুইটি ওষুধের মাঝখানে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যবধান রাখলে তেমন কোন অসুবিধা হয় না, এবং সমস্যার কোন আশঙ্কা থাকে না। তবে হোমিওপ্যাথি ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে তা বাসী পেটে বা খালি পেটেই বেশি কার্যকর।
হোমিওপ্যাথি ভালো নাকি এলোপ্যাথি
হোমিওপ্যাথি ভালো নাকি এলাপতি ভালো বা বেশি কার্যকর এ বিষয়টি এবার দেখে নেব। তথ্য থেকে জানা গেছে ৫০% ক্রমিক রোগ হোমিওপ্যাথি ছাড়া এলাপাতে চিকিৎসায় ভালো হয় না। এছাড়াও এমন অনেক রোগ রয়েছে যেগুলো হোমিওপ্যাথিতে ঔষধে সেরে যায় এলোপতি কোন চিকিৎসা নেই।
যেমন – পরুষের হাইড্রোসিল, ভেরিকোসিল, স্পার্মাটোসিল, এপিডিডাইমাল সিস্ট, নারীদের প্রজনন তন্ত্রের বিভিন্ন প্রকার সিস্ট , ফাইব্রয়েড ইত্যাদি এ ধরনের বহুরূপ রয়েছে যেগুলির এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেই। তাই এলোপ্যাথিক চিকিৎসকগণ চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়ে সেগুলিতে চিকিৎসা পদ্ধতির আরকেটি শাখা সার্জারিতে ট্রান্সফার করে থাকেন।
কিন্তু হয়, সেখানেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না, জীবন আরো কষ্টদায়ক হয়ে উঠে। অথচ অভিজ্ঞ আমিও ডাক্তারের মাধ্যমে এ রোগ গুলির চিকিৎসা দিলে দ্রুত আরোগ্য হওয়া সম্ভব।
১. তরুন রোগের ক্ষেত্রে এলোপাথির চেয়েও দ্রুত ফলাফল দেয় হোমিওপ্যাথি। কিছু কিছু জটিল রোগের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথির পঞ্চাশ সহস্রোতমিক মাত্রা ব্যবহার করলে তা দ্রুত সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২. এলোপ্যাথিক ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়ার অনেক বেশি। নিয়মিত এলাপতি ওষধ ব্যবহার করলে বিভিন্ন ধরনের জটিল ও কঠিন রোগ সৃষ্টি হতে পারে। যেমন কিডনির সমস্যা হতে পারে ব্যথার ওষুধ সেবন করলে। কিন্তু হোমিওপ্যাথির ঔষধ এ কোন সাইড ইফেক্ট নেই। অর্থাৎ ব্যাথা সারানোর জন্য হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করলে কিডনি জাতীয় সমস্যা আশংকা থাকে না।
৩. বহু রোগ রয়েছে যেগুলির মূলত কোন এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেই। অনেক রোগের ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে এলোপ্যাথিক ডাক্তাররা সঠিক রোগ নির্ণয় ছাড়াই চিকিৎসা দিয়ে থাকে, তাই রোগ কিছুটা কমে গেলেও পরিপূর্ণ রোগ মুক্ত হয় না। সার্জারি ছাড়া হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ৯০% রোগী রোগমুক্ত করা সম্ভব যা অন্য কোন চিকিৎসা পদ্ধতি তা করতে পারেনা।
৪. এলোপ্যাথিক ঔষধ ইঁদুর, বানর, শিল্পাঞ্জি এ সমস্ত প্রাণীর ওপর প্রয়োগ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়, এজন্য মানব শরীরে প্রয়োগ করলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। হোমিও ঔষধ মানব শরীরে পরীক্ষিত। ফুর্মলা অনুযায়ী ঔষধ প্রয়োগ করলে রোগ সেরে যায়।
৫. পূর্বে এলোপথিক চিকিৎসা শাস্ত্রের নিজস্ব কোন সংবিধান নেই। বিশেষজ্ঞগন গবেষণা করে এলোপ্যাথিকে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে আর কিছু কিছু ঔষধের মারাত্মক পার্শপ্রতিক্রিয়ার ফলে একসময় নিষিদ্ধ হচ্ছে। অপরদিকে হোমিওপ্যাথির নিজস্ব সংবিধান এবং ঔষধের প্রয়োগ প্রণালী রয়েছে। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ২০০ বছর আগে যেভাবে প্রয়োগ করা হতো এখন একইভাবে প্রয়োগ করা হয় এবং ফলাফল সে আগের মত একই রকম পাওয়া যায়।
৬. এলোপ্যাথিক ঔষধের সংখ্যা অনেক কম। হোমিওপ্যাথির যে পরিমান ঔষধ রয়েছে,তার এক চতুর্থাংশ এলোপ্যাথি ওষুধ আবিষ্কার সম্ভব হয়নি। বরং জটিল পার্শপ্রতিক্রিয়া জন্ম দেয়ার কারণে বহু এলোপ্যাথিক ঔষধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মন্তব্য
হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথিক দুইটি ওষুধ একসঙ্গে খাওয়া যায় কিনা বিষয়টি আলোচনা মাধ্যমে জানা যায় যে এই ২টি ওষুধ একসাথে খেতে গেলে কিছু নিয়ম অবশ্যই মানতে হবে। যেমন এলাপতি ওষুধ সেবনের 30 মিনিট পর হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়া উচিত। তাহলে এক্ষেত্রে সমস্যার সম্ভাবনা কম থাকে। এছাড়া হোমিওপ্যাথি ওষুধ সাধারণত খালি পেটে বেশি কার্যকর। এলোপ্যাথিক ঔষধ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলে হঠাৎ করে বন্ধ করা উচিত নয়, এই ক্ষেত্রে হোমিও অথবা এলাপতি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা অবশ্যই উচিত।
আমার এই প্রতিবেদনটি আপনার ভালো লাগলে একটি শেয়ার করবেন, তাহলে অন্যান্য ব্যক্তিরাও তথ্যগুলো জানার সুযোগ পাবে, এতক্ষণ ধরে প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।।
খুব ভালো লাগলো। আপনার বক্তব্য দেখে সন্তুষ্ট হয়েছি। ধন্যবাদ।