বিভিন্ন রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরী স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত
প্রিয় পাঠক, হঠাৎ করে কোন লোক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক কি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, বিভিন্ন রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরী স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত বিষয়টি সম্পর্কে কি আপনার সঠিক ধারণা রয়েছে ? আজকের এই প্রতিবেদনে এ সম্পর্কিত বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনা করা হয়েছে।
আজকের এই প্রতিবেদনে জরুরি রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, গলায় কিছু আটকে নিঃশ্বাস বন্ধ হলে তার প্রাথমিক চিকিৎসা, অজ্ঞান রোগের, অধিক রক্তক্ষরণের, নাক দিয়ে রক্ত পড়লে, এলার্জি হলে, জীবজন্তু কামড়ালে, সাপে কামড়ালে, এবং ইলেকট্রিক শখের প্রাথমিক চিকিৎসা সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
ভূমিকা
যে কোন দুর্ঘটনায় আহত বা অসুস্থ ব্যক্তির জন্য একটি তাৎক্ষণিক বা দ্রুততম সাহায্য, যা কোন পেশাদার চিকিৎসা সেবা দানকারী, সেবা দেওয়ার পূর্বে শুরু করা হয় তাকেই প্রাথমিক চিকিৎসা বলা হয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ঘটনা দুর্ঘটনা চোখের সামনে ঘটে থাকে।
একজন পেশাদারী চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যাওয়ার পূর্বে আমাদের প্রাথমিক কিছু চিকিৎসা দেওয়ায় একজন সু নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে এছাড়াও আহত ব্যক্তির জীবন সুরক্ষিত থাকে। চলুন আমরা জেনে নিই কি ধরনের রোগের ক্ষেত্রে কি ধরনের প্রাথমিক সেবা দেওয়া প্রয়োজন সে সমস্ত তথ্যগুলি।
জরুরি রোগীর ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহঃ
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে প্রথমে প্রাথমিক সেবা দিতে হবে। জরুরী রোগীকে প্রাথমিক সেবা দেওয়ার সময় DR ABC কে অনুসরণ করতে হবে, DR ABC কি জিনিস এবার আমরা দেখে নিই।
Danger বিপদের গুরুত্ব মূল্যায়ন করুনঃ
- আপনার জন্য এবং রোগীর জন্য বিপদ গুলো কি তা বোঝার চেষ্টা করুন।
- বিপাদগুলো সম্ভব হলে সরিয়ে দিন, তা যদি সম্ভব না হয়, তবে রোগীকে সরিয়ে দিন।
- আপনার সাথে অন্য কেউ থাকলে সাহায্য করার জন্য তাকে অন্যদের ডাকতে পাঠান।
Response সাড়া দিচ্ছে কিনাঃ
- রোগীর চেতনা আছে কিনা বা সাড়া দিচ্ছেন কিনা তা ভালোভাবে লক্ষ্য করুন।
- রোগীকে প্রশ্ন করুন আপনি কেমন আছেন? কেমন লাগছে ইত্যাদি।
- আদেশ করুন, যেমন আপনার চোখ খুলুন, আমার দিকে তাকান ইত্যাদি।
- রোগীকে প্রয়োজনে হালকা ঝাঁকি দিয়ে দেখুন রোগী সারা দিচ্ছে কিনা।
Airway শ্বাসনালী ঃ
- শ্বাসনালীতে কোন প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা তা ভালোভাবে লক্ষ্য করুন, যেমন জেহবা উল্টে পিছন দিকে গিয়ে শ্বাসনালীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে কিনা, পড়ে যাওয়া বা খুলে যাওয়ার কোন দাঁত রক্তে জমাট বাধা চাকা মাটি বা অন্য কিছু গলায় বা শ্বাসনালীতে দেখা যাচ্ছে কিনা।
Breathing শ্বাস-নিশ্বাস চলছে কিনা ঃ
- একই সাথে থুতনি টা উঁচু করে ধরুন এবং
- মাথা পিছন দিকে হেলিয়ে দিন
Circulation রক্ত চলাচল ঃ
- রোগীর পালস দেখুন, প্রয়োজনে ক্যারোটিড ধমনীর পালস অন্তত ১০ সেকেন্ড দেখুন।
- কোথাও রক্তক্ষরণ হচ্ছে কিনা তা দেখার বা জানার চেষ্টা করুন।
- মুখে মুখে শ্বাস দিন, এক্ষেত্রে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করুন, যেমন
- শ্বাসনালী পরিষ্কার করুন।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিত করে শুয়ে দিন, এক হাতের তালু রোগীর কপালে রেখে হালকা চাপ দিয়ে মাথার পিছনে হেলে দিন।
- এবার অন্য হাতে থুতনিকে সামনের দিকে চাপ দিয়ে শ্বাসনালী খুলে নিন।
- শ্বাসনালী খোলা অবস্থায় বৃদ্ধাঙ্গুলী ও তর্জন দিয়ে নাক চেপে ধরে নাকের ফুটো দুইটি বন্ধ করুন এবং রোগীর মুখের ওপর আপনার মুখ চেপে রাখুন যাতে ফু দিলে বাতাস বাইরে বের হতে না পারে।
- সুস্থ করার জন্য এক সেকেন্ডে একটি ফু দিয়ে দেখুন বুক ফুলে ওঠে কিনা, যদি ফুলে উঠে তবে দ্বিতীয়বার ফু দিয়ে বুকে নড়াচড়া দেখুন।
- যদি বুক ফুলে না উঠে তবে মাথা এবং থুতনি আগের মতো চাপ দিয়ে মুখে ফু দিয়ে দেখুন। দ্বিতীয় বার ফু দিয়ে শ্বাসনালী খুলছে কিনা তা নিশ্চিত হন।
- ৩০ বার বুকের উপর চাপ দেওয়ার পরপরই মুখে দুইবার শ্বাস দেওয়ার মাধ্যমে একটি চক্রপূর্ণ হয়।
- এই পদ্ধতিকে বলা হয় সিপিআর।
- চক্রটি এক নগরের প্রয়োগ করুন যতক্ষণ না বুকের উঠানামা লক্ষ্য করা যায়।
গলায় কিছু আটকে শ্বাস বন্ধ হলে তার প্রাথমিক চিকিৎসা
কিছু আটকে গেলে প্রাথমিক যে উপসর্গ দেখা যায় তা হল-
- শ্বাস নিতে বা কথা বলতে অসুবিধা হবে।
- নিজেই নিজের গলা চেপে ধরবে।
- আঙ্গুল দিয়ে গলা বা মুখের দিকে ইশারা করবে।
এ সমস্ত উপসর্গ দেখা গেলে তাৎক্ষণিক যা করতে হবে তা হল-
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করুন।
- রোগীকে মাথা ঝুকিয়ে বুকের নিচে নামিয়ে ফেলতে বলুন।
- রোগীকে কাশি দিতে উৎসাহিত করুন।
- রোগীর ডানার হাড়ের মাঝখানে পিঠের দিকে হালকা চাপড় দিন পাঁচ বার যাতে নতুন করে আঘাত না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- দেখুন প্রতিবন্ধকতা দূর হচ্ছে কিনা।
- যদি পিঠে সাপোর্ট দেওয়ার প্রক্রিয়ার সফল না হয় তবে পাঁচবার পর্যন্ত হালকা ভাবে পেটের উপরের দিকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করুন।
- আক্রান্ত ব্যক্তির পিছনে দাঁড়ান।
- রোগীর বুকের খাঁচার নিচে দুই পাশ দিয়ে ধরে একত্রিত করুন ও এক হাত দিয়ে অন্য হাত চেপে ধরুন যথেষ্ট শক্তি দিয়ে উপরের দিকে এবং পেটের ভিতর দিকে চাপ দিন।
- এক ক্ষেত্রেও যদি সফল না হন তবে সাহায্যের জন্য কাউকে ডাকুন।
- পিঠের সাপোর্ট দেওয়া ও পেটে চাপ দেওয়া চক্রটি চালিয়ে যেতে থাকুন যতক্ষণ না পর্যন্ত শ্বাসনালী পরিষ্কার হয় বা কোন সাহায্য এসে পৌঁছায়।
অজ্ঞান রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা
মস্তিষ্কে দুর্বল রক্ত সরবরাহর কারণে সাময়িকভাবে জ্ঞান হারানোকে অজ্ঞান হওয়া বলে যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হতে পারে। হঠাৎ করে কোন ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে আমাদের যা করতে হবে তা হল-
- অজ্ঞান ব্যক্তিকে চিৎ করে শুয়ে দিন।
- পরিধেয় কাপড়ের বন্ধনী গুলো খুলে ঢিলা করে দিন।
- রোগীর পা গুলো উঁচু করে বালিশের উপরে রাখুন যাতে করে মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
- রোগী যাতে পর্যাপ্ত বাতাস পায় তার নিশ্চিত করুন।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করুন এবং ধীরে ধীরে উঠে বসতে সহায়তা করুন।
- আবার অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে আবার শুয়ে দিন এবং পা দুটো উঁচুতে তুলে ধরুন যতক্ষণ না উনি পুরোপুরি সুস্থ বোধ করেন।
- রোগী সুস্থ বোধ করলে তাকে বুঝিয়ে বলুন কি ঘটেছিল।
- ঠান্ডা পানি এবং মিষ্টি পানীয় পান করতে দিন।
- যদি রোগের উন্নতির কোন লক্ষণ দেখা না যায় তবে তাকে দ্রুত হাসপাতালে রেফার করুন।
অধিক রক্তক্ষরণের প্রাথমিক চিকিৎসা
কোন দুর্ঘটনা বা বিভিন্ন কারণে শরীরের কোন অংশ কেটে যাওয়ার ফলে যে রক্তক্ষরণের সৃষ্টি হয় এই রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য প্রাথমিক যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় তা নিম্নরূপ-
- আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে শুইয়ে দিন।
- ক্ষতস্থান কে সতর্কভাবে উন্মুক্ত করুন।
- ক্ষতস্থানটিতে জীবাণুমুক্ত গজ বা ড্রেসিং দিয়ে সরাসরি চাপ দিয়ে ধরে রাখুন।
- যদি কোন বস্তু বিধে থাকে তবে ক্ষতস্থানের পার্শ্ব থেকে চাপ প্রয়োগ করুন।
- রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে আসলে, বর্তমান ড্রেসিং এর ওপরে আরো জীবাণুমুক্ত ড্রেসিং ব্যবহার করে ব্যান্ডেজ করে দিন।
- যদি এই ড্রেসিং রক্তে ভিজে যায় তাহলে আরো ড্রেসিং ব্যবহার করুন।
- ক্ষতস্থানটি হাত বা পায়ে হয় তবে তা উঁচু করে রাখার ব্যবস্থা করুন।
- যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে প্রেরণ করুন।
নাক দিয়ে রক্তক্ষরণের প্রাথমিক চিকিৎসা
নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে আমরা অনেক সময় ঘাবড়ে যাই। কি করতে হবে সেটা সঠিক জানা না থাকার কারণে অনেক ভয়ভীতি কাজ করে কাজ করে। যেকোনো একটি বা উভয়ই নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে, এরকম হলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আমাদের যা করণীয় তা হল-
- রোগীকে নিরাপদে এবং আরামে বসার ব্যবস্থা করুন এবং মাথা সামনের দিকে ঝকিয়ে রাখতে বলুন।
- এতে নাক দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়ে বাইরে পড়ে যাবে।
- জমা রক্তটুকু পড়ে যাবার পর দুই আঙ্গুলে নাকের ছিদ্র দুইটি চেপে ধরতে বলুন এবং মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে বলুন।
- এই অবস্থায় রোগীকে কথা বলা, কাশি বা থুতু ফেলা বা হাঁসি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলুন।
- রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে রোগীকে হাসপাতালে প্রেরণ করুন।
সাধারণ এলার্জির প্রাথমিক চিকি ৎসা
এলার্জি তখনই হয় যখন একজন মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কোন এক বা একাধিক উপাদানের প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীন হয়ে ওঠে এবং প্রতিক্রিয়া ঘটায় যা সাধারণত প্রায় সকল মানুষের জন্য কোন সমস্যা করে না, সে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এলার্জি বলে।
যে সকল উপাদান এই ধরনের পরিস্থিতির কারণ তাদেরকে অ্যালার্জেন বলা হয়। যেমন-ঘরের ধুলাই অবস্থানকারী মাইট, পোষা প্রাণী ( বিড়াল, কুকুর ), কীটপতঙ্গ, বিভিন্ন খাবার এবং বিশেষ বিশেষ ওষুধ। এলার্জি হলে যে সমস্ত প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করতে হয় তা হলো-
- দ্রুত এলার্জির কারণ চিহ্নিত করার চেষ্টা করুন।
- এলার্জির উৎস থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দূরে সরিয়ে নিন।
- শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এমন রোগের মাথার নিচে বালিশ দিবেন না, এতে তার শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
- রোগীরশ্বাসকষ্ট হতে থাকলে তাকে মুখে কিছু খেতে দিবেন না।
- যদি রোগীর শরীরে লালচে চাকা দেখা দেয় এবং সেগুলো খুব চুলকায় তবে বরফ বা ঠান্ডা স্যাক দিন এবং মেডিসিন শপে বিনা ব্যবস্থাপত্রে বিক্রয়যোগ্য স্টেরয়েড ক্রিম ( হাইড্রোকর্টিশন ) লাগান।
- যদি রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা যায়, তবে দ্রুত কোন চিকিৎসকের নিকট বা হাসপাতালে রেফার করেন।
জীবজন্তুর কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
জীবজন্তু যেমন কুকুর, বিড়াল কামড়ে ত্বকের আবরণ ভেদ করে শরীরের ক্ষত সৃষ্টি করে। লোকালয়ে জীব জন্তুর কামড়ে যে ঘটনাগুলো ঘটে তার কারণ হলো সাধারণত সাপ , কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, বানর, বাঁদুর ইত্যাদি। যে কোন প্রাণীর কামড় এর ক্ষেত্রে প্রাথমিক সেবা এবং চিকিৎসা সেবা নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কারণ এতে করে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস জনিত সংক্রমনের ঝুকি থাকে। যেমন রাবিশ।
- সংগ্রহ থাকলে ডিসপোজেবল গ্লাভস পরিধান করুন।
- সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর জন্য কামড়ের স্থানটি ভালোভাবে প্রচুর পানি ও সাবান ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন।
- রোগীকে আশ্বস্ত করুন।
- রক্তক্ষরণ থাকলে চাপ দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন।
- রক্তক্ষরণ বন্ধ হলে এবং পরিষ্কার করা হয়ে গেলে জীবাণু মুক্ত গজ দিয়ে ক্ষতস্থান ঢেকে দিন বা প্লাস্টার ব্যবহার করুন।
- কুকুর, বানর,বাদুড় ইত্যাদির কামড়ে রাবিশ টিকা নেওয়া জরুরী। যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে প্রেরণ করুন।
সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
সাপে কামড়ের জন্য যে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করতে হবে তা হল-
- সাবান ও পানি দিয়ে ক্ষতস্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- রোগীকে আশ্বস্ত করুন এবং চিন্তা করা থেকে বিরত থাকতে বলুন।
- রোগীকে বিশ্রামে রাখুন, এমনভাবে শুয়ে রাখুন যাতে ক্ষতস্থানটি হৃদপিণ্ডের লেভেলে থাকে।
- যদি ক্ষতস্থানটি হাতে বা পায়ে হয় তবে এমন ভাবে চেপে ব্যান্ডেজ করুন যাতে নাড়াচড়া কমে যায় বা সম্ভব না হয়, প্রয়োজনে কাঠের বা বাঁশের টুকরা ব্যবহার করুন।
- এরপর রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে রেফার করুন।
সাবধানতা অবলম্বনঃ
- ক্ষতস্থানটি কাটা যাবে না।
- ক্ষতস্থানটি মুখ লাগিয়ে চোষা যাবে না।
- টরনিকুয়েট জাতীয় রক্ত চলাচল বন্ধ করার বাঁধন বাধা যাবে না।
- ক্ষতস্থানে কোন কেমিক্যাল বা ইনজেকশন দেওয়া যাবে না।
- ক্ষতস্থানে বরফ লাগানো যাবে না।
ইলেকট্রিক শকের প্রাথমিক চিকিৎসা
ইলেকট্রিক শকের কারণে কোন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক যে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করতে হবে তা হল-
- বিদ্যুৎ শকের উৎস থেকে বিদ্যুৎ প্রবাহের সুইচ অফ করতে হবে।
- সম্ভব হলে রোগীকে সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যান। প্রয়োজনে বিদ্যুৎ ও কূপরিবাহী জিনিস যেমন প্লাস্টিক বা কাঠের বোর্ড ইত্যাদি ব্যবহার করুন।
- যদি পালস, শ্বাস-প্রশ্বাস, নড়াচড়া, বুকের উঠানামা বা রক্ত চলাচলের কোন চিহ্ন দেখা না যায় তবে তাৎক্ষণিকভাবে সিপিআর আরম্ভ করুন।
- রোগী যাতে ঠান্ডা হয়ে না যেতে পারে সে ব্যবস্থা নিন।
- পুড়ে যাওয়া অংশ ব্যান্ডেজ করে নিন। এতে জীবনমুক্ত গজ ও ব্যান্ডেজ ব্যবহার করুন।
- অন্য কোন আঘাত আছে কিনা দেখুন এবং তার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করুন।
- যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে প্রেরণ করুন।
মন্তব্য
পরিশেষে বলতে পারি যে, যে কোন সময় যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে রেজিস্টার্ড চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পাওয়া সম্ভব নয়। কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা পেলে রোগের জন্য সহায়ক হবে, এজন্য আমাদের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা উচিত। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে মেডিকেলে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
very good